শীতের-সুস্বাদু-ফল ও গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
আমরা সকলে জানি হিমেল বাতাস-হাওয়ার শীতের কথা মানে করিয়ে দেয়। এবং মনে করিয়ে দেয় হরেক রকম ফলের কথা। খেজুরের রসের কথ, পিঠা-পায়েশ যেন শীতের কনকনে ঠাণ্ডাকেও মিষ্টি করে তোলে। আরও মিষ্টি করে তোলে শীতের ফল। এ ঋতুর কমলা, কুল, সফেদা, জলপাই ইত্যাদি ফল মুখের স্বাদ শক্তি বল বাড়িয়ে দেয়।
এসব ফল ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও নানা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টে ভরপুর থাকে। যেগুলো খেলে আমরা শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকে এবং শক্তি সঞ্চয় করি। আমি আজকে ফল সম্পর্কে কিছু ধারনা দেব। চলুন আমরা ফল সম্পর্কে কিছু ধারনা নেই।
ভূমিকাঃ
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি কিছু ফল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যে ফল গুলোতে পুষ্টিগুণ রয়েছে। এবং সেই ফলগুলো আমরা খাওয়ার চেষ্টা করব যদি সম্ভব হয়। তাহলে আর দেরি না করে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফল সম্পর্কে কিছু ধারনা নেই। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক ফলমূল সম্পর্কে।
ডালিম ফল এর গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা
ডালিম: ডালিম অন্যান্য ফলের চাইতে গুন সম্পন্ন। এবং একটি জনপ্রিয় ফল। আর ফলটি কারও কাছে বেদানা, কারও কাছে আনার নামে পরিচিত। আর এই ফল তিন ধরনের পাওয়া যায়।
- মধুর ডালিম,
- কষায় ডালিম
- ও টক ডালিম
মধুর ডালিমের দানাঃ বেশি লাল, রসালো ও বেশ উপকারি। যার জন্য এই ফলের দামও অনেক বেশি। এবং এ ফল খেলে শরীরের নানান ধরনের রোগ থেকে আরোগ্য পাওয়া যায়।
- আমাশয়,
- হৃদরোগ,
- লিভার বৃদ্ধি,
- অনিদ্রা,
- অজীর্ণ,
- রক্তপিত্ত,
- অরুচি,
- কৃমি,
- শ্বেতপ্রদহ,
- স্মৃতিশক্তি
কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় মধুর ডালিম অনেক উপকারি। তাই বলব যাদের এই সমস্ত সমস্যা রয়েছে। তারা সম্ভব হলে এই ফলটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এবং এ সমস্ত রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করন।
সফেদা ফলের গুন সম্পর্কে আলোচনা।
সফেদা:সফেদা ফল দেখতে অনেক সুন্দর না হলেও নানা গুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। সুগন্ধ আর মিষ্টতার দিক দিয়ে ফলটি অন্য ফলের চেয়ে অনেক গুণ এগিয়ে রয়েছে। অপুষ্টি, পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি, হার্টের দুর্বলতা ইত্যাদি রোগে পাকা সফেদা অনেক উপকারি। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সফেদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে আমি মনে করি।
কমলা ফলের গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা।
কমলা: আমরা জানি কমলা শীতের ফলের রাজা বলা হয়। আর গুণে ফলটির তুলনা দিক দিয়ে অতুলনীয়। এবং বর্তমানে আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু কিছু কমলার চাষ হচ্ছে। এবং ডাক্তারের মতে কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি, রয়েছে । যেটি হৃদরোগীদের জন্য কমলা খুবই উপকারি। প্রতিদিন একটা কমলা খেলে অপুষ্টি দূর হবে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে।
আপনাদের মধ্যে যারা ভিটামিন সি অভাবে ভুগছেন এবং হৃদরোগে, অপুষ্টিতে, ক্যান্সারে ভুগছেন। আপনারা পক্ষে কমলা ফলটি সম্ভব হলে কিনে খাবেন। তাহলে এ সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করি।
কুল বা বরুই ফল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
কুল: শীতের ফল এর মধ্যে জনপ্রিয় কুল। আর এই ফল সচরাচর দেশের সব জায়গাতেই দেখা যায়। কুল বা বরুই নানা জাতের হয়। যেমন-
- নারকেল কুল বা বোরই
- আপেল কুল বা বোরই
- বাউ কুল বা বোরই
- সবজি কুল বা বোরই ইত্যাদি।
তবে সব জাতের কুল বা বরুই ফলে উপকারি রয়েছে। ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, প্রদাহ, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা কুল বা বরুই পাতা, বা ছাল এ সমস্ত সমস্যা সমাধান করতে পারে। তাই আমি বলব যাদের এ সমস্ত রোগ বা সমস্যা রয়েছে তারা কুল বা বোরই অবশ্যই খাবেন।
জলপাই ফল সম্পর্কে কিছু ধারনা নিম্নে বর্ণিত।
জলপাই: শীতকাল বা ঋতুতে জলপাই জনপ্রিয় ফল। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য বেশি জনপ্রিয় জলপাইয়ের পাতা ও ফল দুটোই বিশেষ উপকারি। ফলের রস থেকে তৈরি হয়। তেল যার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। তবে জলপাই টক জাতীয় এ ফলে রয়েছে ভিটামিন এ, সি,ই নামক ভিটামিন। আর এই
ভিটামিন গুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করতে অনেক ভূমিকা রাখে। উচ্চরক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। হৃদপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় রাখে। কোলনের পাকস্থলির ক্যান্সার দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এই জলপাই ফলটি।
আমলকী ফল সম্পর্কে আলোচনা।
আমলকী:শীতের ফলমূলের মধ্যে সুস্বাদু এবং উপকারি ফল আমলকী। আমলকীকে বলা হয়। ভিটামিন ‘সি’-এর রাজা। আর এ ভিটামিন সি ত্বক সুরক্ষা, মাড়ি মজবুত এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সেজন্য আমলকি ফল ব্যবহার করে ভিটামিন সি ত্বক সুরক্ষা মাড়ি মজবুত এবং ক্যান্সার রোগের মত বিভিন্ন রোগ এর থেকে আরোগ্য পেতে পারি।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক আজকের আলোচনা বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে ছিল। যেগুলো শীতকালের বা ঋতুভিত্তিক ফল। যেগুলো ঋতুর অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধ করে। এছাড়া ফলই বলের উৎস বলে মনে করি। তাই আপনাদেরকে অনুরোধ করব যদি সম্ভব হয়। তাহলে ওষুধ কম খেয়ে একটু বেশি ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন। সুস্থ থাকুন এ প্রত্যাশায় এবং আপনাদের সুস্থতা কামনা করে শেষ করছি।