ক্যান্সারের উপসর্গকে অবহেলা করা উচিত নয়।

প্রিয় পাঠক ক্যান্সারের নাম শুনলে বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন। এটি একটি মারাত্মক রোগ যাতে আক্রান্তরা মারা যায়। কিন্তু ৭০ এর দশকের পর থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের বেঁচে থাকার হার ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আরে সবই সম্ভব হয়েছে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা সেবা গ্রহণের ফলে বাস্তবে বেশিরভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসা উপযোগী।

ক্যান্সারের  উপসর্গকে অবহেলা করা উচিত নয়।

ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুরা এই প্রতিবেদন বা আর্টিকেল এ আপনাদের এমন দশটি উপসর্গ সম্পর্কে জানাবো যেগুলোকে অবহেলা করা উচিত নয়। বলে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি মনে করে থাকে আশা করি এ থেকে পাঠক বন্ধুরা অনেক উপকৃত হবেন। চলুন শুরু করা যাক।

এবং যেসব রোগীরা খুব মারাত্মক পর্যায়ে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন। তাদের জন্য এর ফল অধিক কার্যকরী কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে এমন অনেক ছোটখাটো উপসর্গ দেখা যায়। যেগুলোকে আমরা গুরুত্ব দেই না। কিন্তু ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় এই সমস্ত ছোটখাটো উপসর্গ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সার গবেষণা সংস্থার এক গবেষণা থেকে জানা যায়। অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা জীবনে কোনো না কোনো সময় এমন কোন উপসর্গে ভুগছেন যেটি আসলে ক্যান্সারের উপস্থিতি জানান দেয়। কিন্তু মাত্র ২% মানুষ মনে করেছেন। এর জন্য তাদের ভক্তে হতে পারে এবং এক তৃতীয়াংশ মানুষ এটাকে কোন পাত্তা দেয়নি। এবং তারা চিকিৎসকের শরণাপন্নও হয়নি।

গবেষণা বা গবেষকঃ

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এর একজন গবেষক এবং এই ক্যান্সার গবেষণার প্রধান ক্যাটরিনা হুইটেকার বলেন। আপনার যদি এমন কোন উপসর্গ থেকে যেটা সহসায় যাচ্ছে না। বিশেষ করে এমন উপসর্গ যেগুলোকে ক্যান্সারের জন্য হুঁশিয়ারি সংকেত হিসাবে মনে করা হয়। তাহলে সেগুলোকে অবহেলা না। করে আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। 

এবং তার সাহায্যে চাওয়া উচিত। কারণ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া ক্যান্সার আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই জীবনে কোন না কোন সময় ওজন হারাতে শুরু করেন। যখন আপনি কোন ধরনের কারণ ছাড়া ওজুহাতে শুরু করেন। তখন এটাকে বলা হয়। ব্যাখ্যাহীন ওজন হারানো এতে চিন্তার কারন আছে। 

ব্যাখ্যাহীনভাবে বা কোন কারন ছাড়াই ৫কেজিবা তার বেশে কমলে সেটা আপনার জন্য ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। অগ্নাশয়,পাকস্থলী, খাদ্যনালী বা ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়ার এ লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

উপসর্গঃ

জ্বর ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে। জ্বর অবশ্য যেখানে ক্যান্সার উৎপন্ন হয়েছে। সেখান থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে তখন প্রায়ই জ্বর হয়। ক্যান্সার আক্রান্ত সবাই কোন না কোন সময় জ্বরে ভোগেন বিশেষ করে যদি ক্যান্সার বা এর চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার।

উপর প্রভাব ফেলে তাহলে জ্বর বেশি হয়। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর ক্যান্সারের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে যেমন লিওকেমিয়া বা লিম্ফুমা।

ক্লান্তি ভাবঃ

ক্লান্তি এখানে ক্লান্তি বলতে বোঝায়। চরম ক্লান্তি ভাব বা বিশ্রাম নেওয়ার পরেও ক্লান্তি দূর না। হওয়া ক্যান্সার বাড়ার সাথে সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হিসেবে দেখা যেতে পারে। কিছু কিছু ক্যান্সার যেমন লিউকেমিয়া ক্ষেত্রে শুরুর দিকেই ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। কিছু কোলোন বা মলাশয়।

ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে। তবে এটি সব ক্ষেত্রে হয় না। এর কারণেও ক্যান্সারের সময় ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

পরিবর্তনঃ

ত্বক এ পরিবর্তন ত্বকের ক্যান্সার ছাড়াও আরো কিছু ক্যান্সার রয়েছে। যাতে আক্রান্ত হলে ত্বকের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে রয়েছে। ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা হাইপার পিগ মেনশন, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস ত্বক লাল হয়ে যাওয়া। চুলকানি অতিরিক্ত মাত্রায় চুলের বৃদ্ধি ইত্যাদি।

পরিবর্তন মলাশয়ঃ

অন্ত্রের ক্রিয়া বা মলাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন কোষ্ঠকাঠিন্য ,ডায়রিয়া বা আপনার মনের আকারের দীর্ঘদিনের পরিবর্তন মলাশয় এর ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত বা মূত্রশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন। যেমন আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি মূত্রাশয়ের বা পোশ্চ্রেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

ক্ষতঃ

যে ক্ষত ভালো হয় না। অনেকেই জানেন না যে দেহে যদি আঁচিল থাকে আর সেটা যদি প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে বা সেখানে ব্যথা অনুভূত হয়। বা রক্ত ক্ষরিত হয়। তাহলে এটি ত্বকের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু শরীরে যদি কোন ক্ষত থাকে যার সপ্তাহেরও বেশি সময় পর্যন্ত ভালো হচ্ছে না। তাহলে এটিও একটি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

মুখে যদি এমন কোন ক্ষত হয়। তাহলে এটি মুখের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। আপনার মুখের যে কোন পরিবর্তন যদি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকে। তাহলে আপনার ডাক্তার বা ডেন্টিসকে দেখানো উচিত শিশ্ন বা জরায়ুতে ক্ষত হয়। কোনো সংক্রমণের লক্ষণ বা ক্যান্সারের প্রাথমিক অবস্থা হতে পারে। এমন অবস্থায় একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই উচিত বলে মনে করি।

রক্তপাতঃ

রক্তপাত ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় কিংবা তার ছড়িয়ে পড়ার পরে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। কাশির সঙ্গে রক্তপাত ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। অন্যদিকে যদি মলের সঙ্গে রক্তপাত হয়। তাহলে এটি মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এন্ড্রোমেট্রিয়াম বা জরায়ুর আবরণে সার্ভিকাল ক্যান্সারের কারণে জরিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে।

এছাড়া মূত্রের সঙ্গে রক্ত পড়লে সেটি মুত্রাশয় বা কিডনির ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। স্তনউবৃন্ত বা স্তনের বোটা থেকে রক্ত মিশ্রিত পদার্থ বের হলে। এটি স্তনের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

স্থান গোটাঃ

শরীরের যেকোন স্থান গোটা হয়ে যাওয়া অনেক ক্যান্সার ত্বকের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। এ ধরনের ক্যান্সার সাধারণত স্তন, খণ্ড কোষ, গ্রন্থি এবং শরীরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দেহে শক্ত ভাব বা মাংস জমে আছে। এ ধরনের অনুভূতি হয়। এটা এ ধরনের ক্যান্সারের প্রাথমিক বা বিলম্বিত উপসর্গ হতে পারে।

গিলতে গেলে অসুবিধাঃ

গিলতে অসুবিধা ক্রমাগত বদ হজম বা কোন কিছু গিলতে গেলে অসুবিধা হলে। সেটি পাকস্থলী বা গলার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তবে যাই হোক না কেন। এই প্রতিবেদনে দেখানো প্রতিটি উপসর্গই ক্যান্সার ছাড়াও আরো অন্য কারণেও হতে পারে।

কণ্ঠস্বরের পরিবর্তনঃ

টানা কাশি বা কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন টানা কাশি ক্যান্সার ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন আসলে তা ষড়যন্ত্র বা থাইরয়েডের ক্যান্সারের উপস্থিতি নির্দেশ করতে পারে।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে এমন নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন। এবং বেশি বেশি বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করো যাতে করে পোস্ট লিখতে কোন প্রেরিত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন