শীতকালে কেন কাঁচা বাদাম খাওয়া জরুরি বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় বন্ধুরা আমরা ভাজা বাদাম খেতে অনেকে ভালোবাসি বা মজা পায়। কিন্তু আমরা জানি না ভাজা বাদাম এর চাইতে কাঁচা বাদামের পুষ্টি গুনাগুন অনেক বেশি। তাই আজকে আমরা কাঁচা বাদামের প্রিয় গুনাগুন সম্পর্কে জানবো কাঁচা বাদামের পুষ্টিগুণ হচ্ছে। হাড় গঠনে ও মাংসপেশি মজবুত রাখে। এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত ও বৃদ্ধি করে।
ক্যানসার প্রতিরোধে এবং ব্লাডসুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা বাদামে থাকে ক্যালোরি, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ম্যাঙ্গানিজ সহ একাধিক উপকারী উপাদান। তাই কাঁচা বাদামের তুলনা হয় না।

ভূমিকা:

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা জানেন বাদাম খাওয়া সম্পর্কে কিন্তু জানেন না। কাঁচা বাদাম খাওয়া কতটুকু উপকার তাই আজকে আমরা শীতকালে বাদাম খাওয়া জরুরি ও কাঁচা বাদামের গুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। এবং পারাতপক্ষে চেষ্টা করব। ভাজা বাদাম না খেয়ে কাঁচা বাদাম খাওয়ার তাই আমি এই আর্টিকেলে কাঁচা বাদাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা তুলে ধরছি।

যাতে করে পাঠকদের অনেকটি উপকারে আসে। তাহলে চলুন দেরি না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

বাদাম কত প্রকার সেই সম্পর্ক:

আমরা জানি বাদাম সাধারণত চার প্রকার।
  • কাঠ বাদাম
  • চীনা বাদাম
  • পেস্তা বাদাম
কাজু বাদামকাঠ বাদাম: একটি বৃহদাকৃতির গাছের ফলের বীজ। বীজের নাম অনুযায়ী এই গাছকে কাঠ বাদাম গাছ ডাকা হয়। এটি নিরক্ষীয় অঞ্চলে জন্মানো লেডউড জাতীয় পরিবারের একটি বৃক্ষ। এবং এই গাছ আমাদের দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করে থাকে। গাছের রসালো ফলের অভ্যন্তরে ৩-৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ কয়েকটি বীজ থাকে।

যা খোসার ভিতর থেকে ফল বের করে নিয়ে সরাসরি কাঁচা বা ভেজে খাওয়া হয়। আর এই বিচিগুলিই কে কাঠবাদাম নামে পরিচিত বা নামকরণ করা হয়। এবং বিচিগুলো বাদামের গন্ধ যুক্ত থাকে। আবার কাঠ বাদামকে সারা বিশ্বে ভারতীয় বাদাম নামেও পরিচিত।

কাঠ বাদামের গাছের গঠন সম্পর্কে কিছু ধারনা:

কাঠ বাদামের গাছ ৩৫ মিটার (১১৫ ফুট) উঁচু হয়ে থকে। গাছটির উপরের দিক থেকে আনুভূমিকভাবে ডালপালা বের হয়। এর ফলটি রসালো প্রকারের ও ভেতরের প্রকোষ্ঠে কয়েকটি বীজ থাকে। ফল পাকলে এই বিচিগুলো খাবার যোগ্য হয়। বীজগুলো খেতে অনেকটা আখরোটের মতো। গাছের বয়স বাড়লে এর উপরের দিকের ডালপালা অনেকটা চ্যাপ্টা হয়ে যায়।

দেখতে ফুলদানীর মতো লাগে। শাখা প্রশাখা গুলো স্তরে স্তরে সাজানো থাকে। দেখতে ভালই লাগে। পাতাগুলো আকারে বেশ বড়ো ১৫-২৫ সেমি বা ৫.৯ অথবা ৯.৮ ইঞ্চি দীর্ঘ হয়ে থাকে। এবং ১০-১৪ সেমি ৩.৯ অথবা ৫.৫ ইঞ্চি চওড়া ডিম্বাকার হয়ে থাকে। এবং চকচকে সবুজ বর্ণের হয়। শুষ্ক মৌসুমে পাতা ঝরে যায়। এবং সে পাতা জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়।

আর পাতা ঝরার আগে পাতাগুলো গোলাপী-লাল বা হলদেটে-খয়েরি রঙের হয়ে যায়। এর কারণ হলো ভায়োলাক্সান্থিন, লুয়েটিন ও যিক্সান্থিন নামের রঞ্জক পদার্থ এই হলো কাঠবাদাম গাছের গঠনসমূহ।

কাঠবাদামের উপকারী ভূমিকা:

  • ভেজানো বাদাম খাওয়া হৃদয়কে সুস্থ রাখে এবং খারাপ কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি দেয় এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়।
  • ভেজানো বাদাম খেয়ে এতে উপস্থিত ভিটামিন ই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে। বাদামে উপস্থিত এই উপাদানটি বার্ধক্যজনিত ও প্রদাহকে বাধা দেয়। যা ফ্রি র‌্যাডিক্যাল গুলির কারণে ঘটে।
  • প্রতিদিন বাদাম খাওয়া ওজন হ্রাস, কোমর চিকিৎসা হ্রাস এবং স্থূলত্ব প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। এটি তাত্ক্ষণিক প্রাক-জৈবিক স্বাস্থ্যের কারণে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এবং হজম বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
  • কাঠবাদাম নিয়মিত সেবন করলে বাদামের স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, মলদ্বার ক্যান্সার এবং কোলনের ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে।
  • কাঠবাদাম খাওয়া হাড়ের ভর ও ঘনত্ব হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়তা করতে অনেক ভূমিকা রাখে।
  • কাঠ বাদামে সবচেয়ে উপকারিতা মস্তিষ্কে উন্নতিতে রয়েছে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করার সাথে সাথে আপনার জ্ঞান এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে আন্তরিক ভূমিকা আগে।

চিনা বাদাম উৎপাদনের দেশ ও গঠন সমূহ:

চীনাবাদাম লেগাম গোত্রের একটি প্রজাতি গাছ। যার উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা এবং মেক্সিকো। আদি উৎস আমেরিকা হলেও বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশ। চীন-জাপান- ইন্দোনেশিয়া -মালয়েশিয়া সহ। মধ্য আফ্রিকা, মাদাগাস্কারসহ আরো অনেক উষ্ণমন্ডলীয় উৎপাদনসহ এমনকি আমাদের বাংলাদেশ ও চীনাবাদামের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে।

চীনাবাদাম হচ্ছে। সয়াবিনের পর সর্বাপেক্ষা বেশি তেল প্রদায়ী ফসল।[৪][৫] চীনাবাদামের গাছ একটি ঔষধী জাতীয় লতানো গুল্ম। যা ৩০ সেমি থেকে ৫০সেমি ১ ফুট থেকে ১.৫ ফুট দীর্ঘ হয় থাকে। চীনা বাদামের ফুল থেকে স্বাভাবিক ভাবে অন্যান্য ফুলের মতই ফল হয় না। এদের গাছে হলুদ রং এর ফুল হয়। সেই ফুলে পরাগয়ান হবার পর ফুলের পাপড়িগুলি ঝরে যায়।

ও ওভারীটি ফুলে ওঠে। সেই ফুলে ওঠা ডিম্বাশয়কে পেগ বলা হয়। সেই পেগটি তখন আরো একটি লম্বা হয়ে ওঠে ঠিক তখনই নিচের দিকে ঘুরে যায়। সেই ডিম্বাশয়টি পেগ-স্টেম সহ তখন নিচে ঘুরে গিয়ে এক-দুই দিনের মধ্যে মাটির নিচে প্রবেশ করে ও ধীরে ধীরে চিনাবাদাম ফল হয়ে। মাটির নিচেই বাড়তে থাকে।

তাই আমরা যখন চীন বাদাম এর ফল তুলি তখন মাটির নিচ থেকেই তুলতে হয়। যদিও ফুল মাটির ওপরে স্বাভাবিক ভাবেই হয়। কিন্তু ফল হয় মাটির নিচে।

চিনা বাদামের পুষ্টি ও উপকারিতা:

হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে। বাদামে উপস্থিত ফসফরাস শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু কাজ করে যার প্রভাবে হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাই তো প্রতিদিন এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করলে জীবনে কোনও দিন কোনও হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি পায়: আমেরিকার অ্যান্ড্রস ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে বাদামে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা কগনিটিভ পাওয়া, সহজ কথায় বললে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো পরীক্ষার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ম করে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে: বাদামে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ সংক্রমণকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আরও নানা উপকারে লেগে থাকে।

যেমন, অ্যাক্সিডেটিভ ট্রেস কমিয়ে কোষেদের ক্ষত রোধ করে, সেই সঙ্গে ত্বকের এবং শরীরের বয়স কমাতেও সাহায্য করে থাকে।

পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়: মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসে এদেশে ঝাঁকিয়ে বাসা এই প্রকৃতিক উপাদনটির শরীরে রয়েছে। প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ গ্রাম ফ্যাট সহ ভিটামিন ই, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। এই সবকটি উপাদানই শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ প্রয়োজনে লাগে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো একাধিক ক্রনিক রোগকে দূরে রাখতেও এই উপাদানগুলি সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে মাত্র ১৬১ ক্যালরি প্রবেশ করে। ফলে এই খাবারটি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোনও ভয় থাকে না।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: এটি হল এমন একটি উপাদান যা ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ সংক্রমণকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আরও নানা উপকারে লেগে থাকে।

যেমন, অ্যাক্সিডেটিভ ট্রেস কমিয়ে কোষেদের ক্ষত রোধ করে। সেই সঙ্গে ত্বকের এবং শরীরের বয়স কমাতেও সাহায্য করে থাকে।

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে: গত কয়েক দশকের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখতে পাবেন কীভাবে অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরলের কারণে হার্টের রোগে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পয়েছে। তাই এই বিষয়ে সাবধান থাকাটা জরুরি। শরীরে যাতে কোনও ভাবেই বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

আর এই কাজটি করবেন। কীভাবে? খুব সহজ প্রতিদিনের ডায়েটে বাদামের অন্তর্ভুক্তি ঘটান। তাহলেই দেখবেন। হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে আর চিন্তায় থাকতে হবে না। আসলে বাদামে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান শরীরে অন্দরে ভাল কোলেস্টরলের মাত্রা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে।

এবং সেই সঙ্গে কমে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে: শুধু ডায়াবেটিস নয়। চীনা বাদামে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে। শরীরে এই খনিজটির ঘাটতি দেখা দিলে অল্প সময়ের মধ্যেই ব্লাড প্রেসার মারাত্মক বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। আর বেশি দিন যদি রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।

তাহলে হঠাৎ করে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই দেহে যাতে কোনও সময় ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দেখা না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: চীনা বাদাম খাওয়ার পর ক্ষিদে একেবারে কমে যায়। ফলে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শরীরে প্রয়োজন অতিরিক্ত ক্যালরি জমে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও কমে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: চীনা বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সেই কারণেই তো ডায়াবেটিকদের নিয়মিত বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে। নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করলে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৫-৩৮ শতাংশ হারে কমে যায়। তাই যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে। তারা জেনও সময় থাকতে চীনাবাদামকে কাজে লাগাতে শুরু করে দিন। দেখবেন উপকার মিলবে। ইনশাআল্লাহ

কোষেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: চিনা বাদামে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ই থাকে যার কারণে শরীরের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীরে যাতে কোনও ভাবে ক্ষতের সৃষ্টি না হয়। সেদিকেও অধিক খেয়াল রাখে। যার ফলে বয়স বাড়লেও শরীরের উপর তার কোনও প্রভাব পরে না।

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: চিনা বাদাম বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে। নিয়মিত পানিতে ভেজানো চিনাবাদাম খেলে দেহের অন্দরে বিশেষ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায়।যার প্রভাবে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপও কমে যায়। এবার আশা করি বুঝতে পেরেছেন। চিনা বাদাম প্রতিদিন একমুঠো করে বাদাম খাওয়া কতটা উচিত।

পেস্তা বাদাম এর গঠন ও গুণাবলী:

পেস্তা বাদাম একপ্রকার বাদাম। এই গাছ ছোট এবং মধ্য এশিয়া জাত। পেস্তা বাদামের রঙ সুস্বাদ মনোরম হাল্কা গন্ধ এবং ভালো সংরক্ষণ গুনের জন্য অধিক জনপ্রিয় এবং এই কারণেই অন্যান্য বাদামের তুলনায় এই বাদাম অনেক বেশী দামী। পেস্তা বাদামের চোচা বা খোসা অনেক পাতলা হয়। বাদামগুলি যখন পরিপক্ব হয়।

তখন এই খোসাটি নিজে থেকেই একপাশে ফেটে যায়। ফলে তখন শাঁস খুব সহজেই বার করে নেওয়া যায়। শাঁসটি একটা পাতলা লালচে বাদামী রঙের আবরনে মোড়া থাকে। এই আবরনকে পেল্লিকেল বলা হয়। এই খোসাটি ছাড়িয়ে দিলে, বাদামটি সবুজ বর্নের হয় থাকে। পেস্তা বাদামের সবুজ রঙের জন্য, খাবার সাজানোর কাজে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয়।

বিশেষত দামী দামী খাবারের প্লেট সাজানোর কাজেও ব্যবহার করা হয়।। মিষ্টি, আইস্ক্রিম পুডিং ইত্যাদি বানানোর উপকরন হল পেস্তা বাদাম। এছাড়া নোনতা ও স্যাঁকা পেস্তা বাদাম ভীষন জনপ্রিয়। পেস্তা বাদামের থেকে তৈরী তেল চর্ম রোগের ওষুধ হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে:

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক কার্যকারী ফল। ডায়বেটিস রোগীদের শরীরে গ্লাইকেশন পদ্ধতিতে প্রোটিন জমাট বাঁধে, কারণ রক্তে সুগারের উপস্থিতি। পেস্তায় রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা এই গ্লাইকেশন পদ্ধতিতে বাধা প্রদান করে। প্রোটিন গ্লাইকেশন পদ্ধতিতে জমাট না বাঁধলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। পেস্তা শুধু ডায়বেটিস নয়। রক্তচাপকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে।

পেস্তা বাদাম-এর তৈল: ১০০ গ্রাম পিস্তা থেকে ৬০ গ্রাম সবুজ রঙের গাঢ় মিষ্টস্বাদযুক্ত সুগন্ধ তেল পাওয়া যায়। এটি উষ্ণবীর্য সম্পন্ন। আধকপালিতে কপালের দু’ধারে বাষ্পস্বেদ (গরম জলে কাপড় ভিজিয়ে নিংড়ে সেঁক দিতে হবে) দেওয়ার পর এই তেলের নস্যি নিলে উপকার হয়। এই তেল মদের সঙ্গে পরিমাণমত মিশিয়ে খেলে মদের বিষক্রিয়া নষ্ট হয়।

এটি স্মৃতিবর্ধক, হৃদ্দৌর্বল্যনাশক, বমন বা বমি বমি ভাব নষ্ট করে। কাস, উন্মাদ, মুখক্ষত, রক্তদুষ্টি ও যকৃতের ক্রিয়া হ্রাসে ব্যবহার্য।

ইউনানি মতে: পিস্তা বাদাম উষ্ণবীর্য, তীক্ষ্ণ, শুষ্ক, স্মরণশক্তি বর্ধক, হৃদয়-মস্তিষ্ক-আমাশয়ের শক্তিবর্ধক, কামোদ্দীপক, ক্ষীণ ব্যক্তিকে মোটা করে। কাস, উন্মাদ, বমন, বমনেচ্ছা, পেট কামড়ানি, যকৃৎ বৃদ্ধি ও বৃক্কের ক্রিয়া হ্রাসে ব্যবহার্য। পিস্তা চিবুলে মাড়ি মজবুত হয়। শুষ্ক কণ্ডুতে (চুলকানিতে) পেস্তা গাছের ছাল ও পাতা সিদ্ধ জল দিয়ে শরীর ধুলে ভাল কাজ হয়।

ঐ পানি দিয়ে মাথা ধুলে চুল মজবুত হয়। ও উকুন মরে যায়। তাহলে বোঝা গেল। পেস্তা বাদামে অনেক গুণাবলী রয়েছে। অবশ্যই যাদের সমস্যা গুলো রয়েছে। তারা অবশ্যই এটা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

কাজুবাদাম নিয়ে কিছু কথা:

কাজুবাদাম এই ফল সাধারণত ভেজে খাওয়া হয়। আর পাহাড়ি এলাকায় সাধারণত কাজুবাদামকে দা দিয়ে কেটে খুঁচিয়ে শাঁস বের করা হয়। তারপর রোদে শুকিয়ে বীজের আবরণ তুলে ফেলা হয়। লবণ-জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে তারপর ভাজা হয়। এতে লবণাক্ত স্বাদের কাজুবাদাম পাওয়া যায়। আর মিষ্টি স্বাদের কাজুবাদামের জন্য বাদাম ভাজার পর চিনির শিরায় ডুবিয়ে নেওয়া হয়।

আর এই ফল বিভিন্ন খাদ্যের স্বাদ বাড়ানোর জন্যও কাজুবাদাম ব্যবহার করা হয়। পুষ্টিপদার্থ যেমন তামা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, দস্তা, ফসফরাস, আয়রন, সেলেনিয়াম, থায়ামিন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিপদার্থ ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬ ইত্যাদিতে ঠাসা কাজু বাদাম। এটি একটি ফাইবার জাতীয় খাবার যা কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে।

১ আউন্স বা প্রায় ২৮.৩ গ্রাম কাজু বাদাম থেকে মোটামুটিভাবে ১৫৭ গ্রাম ক্যালরি, ৫.১৭ গ্রাম প্রোটিন, ১২.৪৩ গ্রাম ফ্যাট, ৮.৫৬ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম ফাইবার, ১.৬৮ গ্রাম চিনি পাওয়া যায়।

রোপন পদ্ধতি:

বীজ এবং কলম উভয় পদ্ধতিতেই কাজু বাদামের বংশ বিস্তার করা যায়। কলমের মধ্যে গুটি কলম, জোড় কলম, চোখ কলম ইত্যাদি প্রধান। কাজু বাদাম গাছ ৬০-৭০ বছর পর্যন্ত বাঁচে এবং ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বীজ থেকে পলি ব্যাগে চারা তৈরি করে কিংবা কলম প্রস্তুত করে জমিতে রোপণ করতে হবে।

চারা রোপণের আগে ৭-৮ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে ১ ঘনমিটার আয়তনের গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্তে সবুজ সার এবং পরিমাণমত ইউরিয়া ও টিএসপি সার মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫ দিন পর চারা লাগাতে হবে। চারা গজালে একটি সতেজ চারা রেখে বাকি চারা তুলে ফেলতে হয়। বীজের পরিবর্তে চারা তৈরি করে নিয়েও রোপণ করা যায়। হেক্টর প্রতি প্রয়োজনীয় চারার সংখ্যা ২৪৫-৩৩৫ টি।

শেষ কথা:

আজকের বিষয় ছিল. শীতকালে কাঁচা বাদাম বা বিভিন্ন ধরনের বাদাম পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আশা করি পাঠক বন্ধুরা এখান থেকে অনেক উপকৃত হবেন। এবং কোন উপকারে আসে অবশ্যই পেজটিকে ফলো দিয়ে রাখবেন। যাতে করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ভিত্তিক আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি।

তাই প্রত্যাশা রেখে এবং আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের আর্টিকেলটি এখানে শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন