শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি ইসলামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত পূর্ণ মাস যার নাম হচ্ছে। (সাবান মাস) আর এই মাস নিয়ে আলোচনা করা হবে যা আপনাদের ইবাদত ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অনেকটি কাজে লাগবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা অনেকেই হয়তো জানেন না শাবান মাস কি এবং তার গুরুত্ব কতটুকু আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়লে অনেক না জানা বিষয় আশা করে জানতে পারবেন তাহলে চলুন। দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করি।
ভূমিকাঃ
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শাবান মাসের তৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু ধারনা আসবে ইনশাআল্লাহ। শুধু তাই নয় এই আর্টিকেলে থাকছে।কোরআনের আলোকে শাবান মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে ও রাসুলের জীবনে শাবান মাস কেমন ছিল।
সাহাবীদের জীবনে শাবান মাসের গুরুত্ব কতটুকু দিয়েছে। সে ব্যাপারেও ধারণা আসবে তাহলে আর দেরি না করে আমাদের আজকের বিষয় শাওয়াল মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বা ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা সেটি শুরু করা হচ্ছে।
সাবান মাস কি
হিজরি চন্দ্র বর্ষের অষ্টম তম মাস হলো ‘শাবান’ এই মাসটি অধিক মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ। হিজরতের প্রায় দেড় বছর পর এই মাসেই কিবলা পরিবর্তন হয়েছিল। অর্থাৎ পূর্ব কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাসের পরিবর্তে কাবা শরিফ কিবলা হিসেবে স্বীকৃতি ও নির্ধারিত হয়। আর এই মাসে আল্লাহ রাসূল বারবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছে।
আর এই তাকানোকেই আল্লাহপাক লক্ষ্য করে কোরআনে বলছেন। আমি আপনার আকাশের দিকে মুখমণ্ডল আবর্তন আমি অবশ্যই লক্ষ করি। সুতরাং কিবলার দিকে আপনাকে প্রত্যাবর্তন করে দেব যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন। অতএব আপনি মসজিদুল হারামের (কাবা শরিফ) দিকে চেহারা ঘোরান। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন ওই (কাবা) দিকেই মুখ ফেরাও। সুরা-বাকারা আয়াতঃ- ১৪৪
তাই শাবান মাস একদিকে ইসলামি ঐক্যের মাস। অন্যদিকে কাবা পরিবর্তিত মুসলিম জাতীয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হওয়ার মাস।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশনা সংবলিত অসাধারণ আয়াতটি এই মাসেই অবতীর্ণ হয়। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.) এর প্রতি পরিপূর্ণ রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাগণ নবীজির (সা.) জন্য রহমত কামনা করেন; হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করো এবং যথাযথভাবে সালাম পেশ করো। (সুরা-৩৩ আহজাব আয়াত: ৫৬)
সুতরাং শাবান মাস হলো নবীজির প্রতি অধিক শ্রদ্ধা ভক্তি ও প্রেম-ভালোবাসা প্রদর্শনের মাস। তা হতে হবে সুন্নত অনুশীলনের মাধ্যমে। তাই মুসলমান ভাই বন্ধুদের কে আহবান করব রাসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী এই মাসটিকে পালন করা আমাদের দরকার বা কর্তব্য।
হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, "হে বৎস" যদি পারো এভাবে সকাল ও সন্ধ্যা পার করো যেন তোমার অন্তরে কারও প্রতি হিংসা না থাকে। তবে তাই করো অতঃপর বললেন। এটাই আমার সুন্নত আদর্শ, যে ব্যক্তি আমার সুন্নত অনুসরণ করল, সে প্রকৃতপক্ষে আমাকে ভালোবাসল; যে আমাকে ভালোবাসল, সে জান্নাতে আমার সঙ্গেই থাকবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, তিরমিজি শরিফঃ ৩৬/১৭৫)
শাবান মাসটি অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ একটি মাস। আরবিতে এই মাসের পূর্ণ নাম হলো ‘আশ শাবানুল মুআজজম’ অর্থ মহান শাবান মাস। ‘শাবান’ শব্দের অর্থ দূরে ও কাছে, মিলন ও বিচ্ছেদ এবং সংশোধন বা সুশৃংখলা ও ফ্যাসাদ বা বিশৃঙ্খলা। শাবান মানে দুটি শাখা বা সাদৃশ্যপূর্ণ ও বৈশাদৃশ্যপূর্ণ। বিপরীতধর্মী দুটি বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ পবিত্র-ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী কি? ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী
এ যেন একই অঙ্গে দুটি রূপ। যেমন দুটি শাখা ভিন্ন হলেও একই কাণ্ড মূলে মিলিত যেমন হাতের পঞ্চ আঙ্গুল ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু একই সঙ্গে কাজ করে। অর্থাৎ ভিন্নতায়ও ঐক্য। শাবানের আরেকটি অর্থ হলো মধ্যবর্তী সুস্পষ্ট। যেহেতু এই মাসটি রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী, তাই এই মাসকে শাবান মাস নামকরণ করা হয়। {লিসানুল আরব, ইবনে মানজুর রহ.}
শাবান মাসে আমাদের করণীয়
শাওয়াল মাসে আমাদের করণীয় হচ্ছে। বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করা বেশি বেশি নফল রোজা রাখা যেমন হবে নবীর সাহাবীরা রাখতেন। আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর হাদীস থেকেও জানা যায়। চলুন আমরা আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার কিছু হাদিস জেনে নেই।
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বছরের অন্য কোনো মাসে শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা রাখতে দেখিনি। শাবান মাসে তিনি প্রায় সারা মাসই রোজা রাখতেন। খুব সামান্য কয়েক দিন বাদ যেত। সুনানে তিরমিযিঃ- ৭৩৬
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের তারিখ এতটাই মনে রাখতেন যতটা অন্য মাসের তারিখ মনে রাখতেন না। শাবানের ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন রমজানের রোজা রাখতেন। আর সেই দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবান ৩০তম দিন পূর্ণ করে রমজানের রোজা শুরু করতেন। সুনানে আবু দাউদঃ- ২৩২৭
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাস ব্যতীত আর কোনো সময় পূর্ণ মাসব্যাপী রোজা রাখতেন না এবং শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজাও অন্য কোনো মাসে রাখতেন না। সহিহ বোখারীঃ- ১৯৬৯
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শাবান মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল।
বায়হাকিঃ- ৮৬৯১
শাবান মাসের গুরুত্ব ফজিলত কোরআনের আলোকে
কোরআন শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে কোন দলিল পাওয়া যায় না। তবে একটি আয়াত আল্লাহর রাসূল কে লক্ষ্য করে অবতীর্ণ হয়েছে। এটি হচ্ছে কাবা পরিবর্তনের ব্যাপারে আল্লাহ রাসুল তিনি যখন আকাশের দিকে বারবার তাকাচ্ছেন। ঠিক তখনই আল্লাহ পাক কুরআনুল কারীমে আয়াতটি নাযিল করেন। তবে সেটি ছিল কাবা পরিবর্তনের আর কাবা পরিবর্তনটি হয়েছিল এই সাবান মাসে।
তবে আল্লাহর রাসূলের হাদীস অনুযায়ী অসংখ্য হাদিস পাওয়া যায়। সাবান মাসে লক্ষ্য করে, শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত তাৎপর্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা এখন রাসুলের বর্ণিত হাদিস থেকে কিছু হাদিস শাবান মাসের গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে চলুন জেনে নেই। যা আমাদের অনেক কাজে আসবে ইনশাআল্লাহ। এখন কিছু হাদিস নিম্ন উল্লেখিত হচ্ছে।
রাসুলের এর জীবনে শাবান মাস কেমন ছিল
উসামা বিন যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞেস করেছি, হে আল্লাহর রাসুল, শাবান মাসে আপনি যেভাবে রোজা রাখেন সেভাবে অন্য কোনো মাসে রোজা রাখতে আমি আপনাকে দেখিনি। রাসুল (সা.) বলেন রমজান ও রজবের মধ্যবর্তী এ মাসের ব্যাপারে মানুষ উদাসীন হয়ে থাকে।
এটা এমন এক মাস, যে মাসে বান্দার আমলকে বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই, আল্লাহর কাছে আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার। ( হাদিস নাসাঈ শরীফ )
আরবি দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান মুমিন মুসলমানের ওপর রমজানের রোজা ফরজ হয়। কিন্তু এর আগেও রাসুলুল্লাহর (স) ওপর রোজা ফরজ ছিল। তিনি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন, যা আইয়্যামে বিজের রোজা নামে পরিচিত।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রমজানের রোজার পর নবীজী (সাঃ) শাবান মাসের রোজাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে পালন করতেন। নবীজীর (সাঃ) অনুসারী হিসেবে সাহাবীরাও শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। মাহে রমজান আগমনের পূর্ব থেকেই তাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা বেড়ে যেত। নবীজী (সাঃ) দোয়া করতেন।
যে, হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্যে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। নবীজীকে (সাঃ) কে অনুসরণ করে সাহাবীরাও এই রোজা পালন করতেন। আর রমজানে রোজা ফরজ হওয়ার পর থেকে যুগ যুগ ধরে রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা রোজা পালন করছেন।
আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি সেহেরী ও ইফতারি খেতেন খুব নরমাল হবে। আমরা জেনে নেই। আল্লাহর নবীর সেহরি ও ইফতারি কেমন ছিলেন।
আনাস ইবনে মালেক (রা) বর্ণিত- নবীজী (স) ইফতার করতেন তিনটি তাজা-পাকা খেজুর দিয়ে। তাজা-পাকা খেজুর না পেলে তিনটি শুকনো খেজুর দিয়ে। আর শুকনো খেজুর না পেলে তিন ঢোক পানি পান করে। {তিরমিজী}
নবীজী (সাঃ) ইফতার করতেন খেজুর দিয়ে
রসুল (স) সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে পছন্দ করতেন। ইফতারে দেরি করা তিনি পছন্দ করতেন না। তিনি সেহরি খেতেন রাতের শেষভাগে সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্তে। তার খাবার গ্রহণের সারল্য ও অল্পতুষ্টি বজায় থাকতো সেহরির সময়ও। ঘরে যখন যা থাকতো তাই সেহরি হিসেবে গ্রহণ করতেন।
তবে খাবার যাই হোক না কেন, নবীজী (স) নিয়মিত সেহরি গ্রহণ করতেন এবং সাহাবীদেরও সেহরি গ্রহণের প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা সেহরি গ্রহণ করো, কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বোখারী, মুসলিম)
খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা সুন্নত। খেজুরবিহীন বাড়ির পরিবার যেন ক্ষুধার্ত পরিবার। খেজুর হলো জাদু ও বিষ প্রতিরোধক। মদিনার খেজুর হলো, সবচেয়ে উত্তম খেজুর। বিশেষ করে, সর্বোত্তম খেজুর হলো ‘আজওয়া খেজুর’। তা ছাড়া প্রতিদিনের ইফতারের সঙ্গে খেজুর খাওয়া যেমন একদিকে সুন্নত, অপরদিকে দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য ঘাটতির চাহিদা পরিপূরক।
খেজুরের পুষ্টিগুণের কারণে এ ফলটি অনেক জনপ্রিয়। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার। হাদিস শরিফেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ রয়েছে। হজরত সালমান ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে, সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। কেননা, তাতে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।’ (মেশকাত ১৮৯৩)
আরেকটি হাদিসে রয়েছে, আনাস বিন মালেক (রা.)রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে। (তিরমিজি ৬৩২)
খেজুর দিয়ে ইফতার করার উপকারিতা
খেজুর শুধু রোজার ইফতারে নয়, সারা বছরই আমাদের পছন্দের খাদ্য তালিকায় থাকতে পারে। প্রথমত হাদিসের অনুসরণে খেজুর দিয়ে ইফতার করা। দ্বিতীয়ত খেজুরের ভেষজগুণকেও উপেক্ষা করা যায় না। তাই খেজুর হতে পারে ইফতারের প্রধান উপাদান। সুতরাং খেজুর দিয়ে ইফতার করার উপকারিতা।
- কয়েকটি খেজুরই সাময়িক ক্ষুধা নিবারণে সহায়তা করে।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকায় দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী, সামান্য পরিশ্রমেই যারা পেরেশান হয়ে যান, ইফতারে খেজুর খেলে তাদের দুর্বলতা কেটে যায় এবং রোজা রাখা সহজ হয়।
- শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে খেজুর কার্যকর ভূমিকা রাখে। ফলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের স্বাভাবিকভাবে রোজা রাখা সহজ হয়।
- খেজুর হৃদরোগ, জ্বর ও পেটের পীড়ায় উপকারী এবং বলবর্ধক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। ক্ষুধামন্দা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে খেজুর বিশেষ উপকারী।
- খেজুর পেটের গ্যাস, শ্লেষ্মা, কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় উপকারী। গ্যাসের জন্যও উপকার।
- রোজাদারের পেট খালি থাকায় শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটা দ্রুত পূরণে সাহায্য করে।
নবীজী সাবান মাসে যে দোয়া বেশি বেশী পড়তেন
যেহেতু শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এই মাসটি সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। এবং গুরুত্ব দেখেছেন তাহলে এখান থেকে বোঝা যায় যে শাবান মাসের গুরুত্বটা কত বেশি। শাবান মাসের নবীজির দোয়া রয়েছে যেটি অবশ্যই আমাদের হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হিসেবে করা উচিত।
নবীজি সাঃ রজব মাসের শুরু থেকে রজব ও শাবান মাসব্যাপী রোজা পালন করতেন। কারণ তিনি আল্লাহর কাছে এই মাস দুইটির বরকত কামনা করতেন। সাবান মাস আসলেই সাবান মাসের বরকত কামনা করতেন এবং রমজান মাস পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে আবেদন জানাতেন। তিনি যে দোয়াটি পড়তেন সেটি নিজে উল্লেখ করা হলোঃ
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান
অর্থ: হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস- ২৫৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। শাবান ও রমজানের সর্বোত্তম ব্যবহার যেন আমরা নিশ্চিত করতে পারি এবং দুনিয়া-আখিরাতে আমাদের সব রকম সাফল্য ও সৌভাগ্য দিয়ে ভূষিত করুন। আমিন।
সাহাবীদের জীবনে কেমন ছিল শাবান মাস
সাহাবায়ে-কেরাম (রা.) শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। পবিত্র মাস আগমনের আগে থেকেই তাদের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দিতো।আগে থেকেই রমজানের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনতেন তারা।
নতুন রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে তারা পুরোনো কোনও রোজা কাজা থাকলে তা আদায় করতেন। এ বিষয়ে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘বিগত বছরের রমজানের রোজা আমার ওপর আবশ্যক থাকলে, নতুন বছরের রোজা আগমনের পূর্বে শাবান মাসে আমি সে রোজাগুলোর কাজা আদায় করে ফেলতাম।’ (বুখারি : ১৯৫০)
সাহাবায়ে-কেরাম (রা.) রোজার প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কান্নাকাটি করে। ছয় মাস দোয়ায় কাটিয়ে দিতেন আর ছয় মাস রোজা, ইবাদত, আনুগত্যের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতেন। কেমন যেন পুরো বছরই তাদের রোজার মাস ছিল!
হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা জিদনা ওয়ালা তানকুসনা, ওয়া আকরিমনা ওয়ালা তুহিননা, ওয়া আতিনা ওয়ালা তুহরিমনা, ওয়া আসারনা ওয়া তুসির আলাইনা। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃদ্ধি করে দিন, হ্রাস করবেন না। আমাদেরকে সম্মানিত করুন, লাঞ্ছিত করবেন না। আমাদেরকে দান করুন, বঞ্চিত করবেন না। (মুসনাদে আহমদ ১/১২৪)
শেষ কথাঃ
আজকের আর্টিকেলটি ছিল শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আশা করি জীবন চলার ক্ষেত্রে আর্টিকেলের কথাগুলো এবং রাসুল সাঃ এর হাদিস আমাদের অনেক কাজে লাগবে তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ করার আহ্বান জানিয়ে এবং আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত আর্টিকেলটি এখানে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ