কালোজিরা বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন

কালোজিরা বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরনের গুনাগুনপ্রিয় পাঠক আপনি কি জানেন? কালোজিরা সাধের যৌবন বা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। ফলে নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলবে। 
কালোজিরা বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন
আর কালোজিরা তেল বা বিজ খেলে আমাদের শরীরে কতটুকু উন্নত সাধন করবে, এই বিষয়গুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাতে করে আপনারা এখান থেকে উপকৃত হন তাহলে আর বিলম্ব না করে আমরা মূল আর্টিকেল বা টপিক কালোজিরা গুনাগুন কার্যকরিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

আল-হাদিসঃ- আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি। এ কালোজিরা সাম ব্যতীত সমস্ত রোগের নিরাময়। আমি বললাম সাম কি? তিনি বললেন। "মৃত্যু" আমাদের আধুনিক ডাক্তারিশাস্ত্র আর ধর্মীয় অনুভূতি।

পেজ সূচিপত্রঃ কালোজিরা তেল ও বীজ সংশ্লিষ্ট বিষয় সমূহ

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতা গ্যাষ্ট্রীক বা আমাশয় নিরাময় করে

কালোজিরার চা-চামচ তেল আর সমপরিমাণ মধু মিশ্রণ করে দিনে ৩বার করে ২/৩ সপ্তাহ সেবন করতে হবে। জন্ডিস বা লিভারের বিভিন্ন সমস্যার দূরীকরণে একগ্লাস ত্রিপলার শরবতের সাথে এক চা-চামচ ঔষধি কালোজিরার তেল দিনে ৩বার করে ৪/৫ সপ্তাহ সেবন করলে আল্লাহর রহমতে গ্যাস্টিক আমাশা জন্ডিস ও লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে ইনশাআল্লাহ।

কালোজিরা রিউমেটিক এবং পিঠেব্যাথা দূর করার জন্য বিশেষ কাজ করে

কালোজিরার থেকে যে তেল বের করা হয়। তা আমাদের মানব দেহের বাসা বাঁধা দীর্ঘমেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতে বেশ সাহায্য করে। এছাড়াও সাধারণভাবে কালোজিরা খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে কালোজিরা দুই বছরের বেশী বয়সী শিশুদের কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে। 
দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে কালোজিরা। দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরার তেল সেবন করা উচিত হবে না। তবে বাহ্যিক ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা যাবে তাতে কোন সমস্যা হবে না। 

আর মাথা ব্যথায দূর করতে কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতা মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করলে মাথাব্যথা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতা স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বিশেষ ভূমিকা

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবন করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় কালোজিরা পেটের হজমের সমস্যার কারণে খেতে পারেন। যদি আপনাদের পেটে হজমের সমস্যা থাকে তাহলে এক-দুই চা-চামচ কালিজিরা বেটে পানির সঙ্গে খেতে থাকুন। 

এভাবে প্রতিদিন দুই তিনবার খেলে এক মাসের মধ্যে হজমশক্তি বেড়ে যাবে। পাশাপাশি পেট ফাঁপা ভালো হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। লিভারের সুরক্ষায় ভেষজটি অনন্য। লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী আফলাটক্সিন নামক বিষ ধ্বংস করে কালিজিরা বিজ।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন চুল পড়া বন্ধ করতে বিশেষ কার্যকর

কালিজিরা খেয়ে যান, চুল পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি পাবে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে যাবে। আরো ফল পেতে চুলের গোড়ায় কালোজিরার তেল নিয়মিত ভালোভাবে লাগান দেখবেন আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এবং নতুন চুল গজাতে কালোজিরা তেল সহযোগিতা করবে।

কালোজিরার তেল বা কালোজিরার বিজ দেহের সাধারণ উন্নতি সাধন করেন

নিয়মিত কালোজিরা সেবন করলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। এছাড়া অরুচি, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, জ্বর, শরীর ব্যথা, গলা ও দাতে ব্যথা, পুরাতন মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, খোসপঁচড়া, শ্বেতি, দাদ, একজিমা, সর্দি, কাশি, হাঁপানিতেও কালোজিরা অব্যর্থ ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
এটি মূত্র বর্ধক ও উচ্চরক্তচাপ হ্রাসকারক,গ্যসট্রিক আলসার প্রতিরোধক, ভাইরাস প্রতিরোধক, টিউমার এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক, ব্যকটেরিয়া এবং কৃমিনাষক, রক্তের স্বাবাবিকতা রক্ষাকারক, যকৃতের বিষক্রিয়ানাষক, এলার্জি প্রতিরোধক, বাতব্যথা নাশক। অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, সর্দি, কাশি, হাঁপানি নিরাময়ে কালোজিরা সহায়তা করে। 

ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কালোজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্কিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্কশক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়াতেও কালোজিরা উপযোগী। জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালোজিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু। 

এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায় এবং দেহের কাটা-ছেঁড়া শুকানোর জন্য কাজ করে। এছাড়া শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ (ছোঁয়াচে রোগ) হয় না। তিলের তেলের সঙ্গে কালিজিরা বাঁটা বা কালোজিরার তেল মিশিয়ে ফোড়াতে লাগালে ফোড়ার আরোগ্য পাওয়া যায়।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতা দাঁত ব্যথা দূরীকরণ করে

দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে; জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মরে। শান্তিপূর্ণ ঘুমের প্রয়োজনে কালোজিরার ঔষধি তেল ব্যবহারে রাতভর প্রশান্তিপর্ন ঘুম ঘুমানো যায়। এক কথায় কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতার বিকল্প নাই।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও কার্যকারিতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে

কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি করে। ১চামচ কালোজিরা অথবা কয়েক ফোটা কালোজিরার তেল ও ১চামচ মধুসহ প্রতিদিন সেবন করলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। 

পারকিনসন্স রোগের প্রতিকারে কালোজিরায় থাইমোকুইনিন থাকে যা পারকিনসন্স ও ডিমেনশিয়ায় আক্রান্তদের দেহে উৎপন্ন টক্সিনের প্রভাব থেকে নিউরনের সুরক্ষায় কাজ করে। চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। কালোজিরার তেল চুলের কোষ ও ফলিকলকে চাঙ্গা করে ও শক্তিশালী করে যার ফলে নতুন চুল সৃষ্টি হয়। এছাড়াও কালোজিরার তেল চুলের গোড়া শক্ত করে ও চুল পড়া কমায়।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন কিডনির পাথর ও ব্লাড শধন কারক

২৫০ গ্রাম কালোজিরা ও সমপরিমাণ গুণগত ও মানসম্মত মধু, কালোজিরা ভালোভাবে গুঁড়ো করে মধুর সাথে মিশ্রিত করে দুই চামচ মিশ্রণ আধাকাপ গরম পানিতে মিশিয়ে  আধাকাপ তেল সহ  প্রতিদিন পান করতে হবে। কালোজিরার ও মধু মিশ্রণ কৃত তেল সহ দিনে ৩/৪ বার ১৫ ফোটা সেবন করতে হবে। আশা করি কিডনির পাথর ও ব্লাড সাধন কারক হিসেবে কাজ করবে।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন রাতে ঘুমোবার আগে চোখের উভয়পাশে ও ভুরুতে কালোজিরা তেল মালিশ করুন। এবং এককাপ গাজরের রসের সাথে একমাস কালোজিরা তেল সেবন করুন। নিয়মিত গাজর খেয়ে ও কালোজিরা টীংচার সেবন আর তেল মালিশে উপকার হবে। প্রয়োজনে নির্দেশিত হোমিও ও বায়োকেমিক ওষুধ সেবন করতে পারেন।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন উচ্চরক্তচাপ যখনই গরম পানি বা চা পান করবেন। তখনই কালোজিরা  সাথে খাবেন। গরমখাদ্য বা ভাত খাওয়ার সময় কালোজিরা ভর্তা খান। এ উভয় পদ্ধতির সাথে রসুনের তেল সাথে নেন। সারা দেহে রসুন ও কালোজিরা তেল মালিশ করুন। কালোজিরা, নিম ও রসুনের তেল একসাথে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুন। ভালো মনে করলে পুরাতন রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ডায়রিয়া রোগীর মুখে খাবার স্যালাইন ও হোমিও ওষুধের পাশাপাশি ১ কাপ দই ও বড় একচামচ কালোজিরা তেল দিনে ২ বার ব্যবহার করবেন। আর জ্বর আক্রান্ত রোগীর জন্য সকাল-সন্ধ্যায় লেবুর রসের সাথে ১ চামচ কালোজিরা তেল পান করুন। 

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি ছিল। কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে যদি পূর্ণাঙ্গ ভাবে পড়লে এখান থেকে নিজের এবং পরিবারের জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে নিজে নিজেই চিকিৎসা নিয়ে নিজের শরীরকে সুরক্ষিত করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ রূপে পড়ার আহ্বান এবং আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন