রাতে পানিতে ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ খেলে কী গুণ জেনে নিন

রাতে পানিতে ভেজানো খেজুর ও  কিশমিশ খেলে কী গুণপ্রিয় বন্ধুরা সারা দিনের শেষে অর্থাৎ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগমন মুহূর্তে আপনি কী কখনও ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ খেয়েছেন। না খেয়ে থাকলে আজকের আর্টিকেল মূলত আপনারই জন্য। 
খেজুর ও কিসমিশ
নিয়মিত ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি হয়। আমরা তো শুকনো খেজুর অনেকেই খাই, কিন্তু আমরা কি জানি পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিসমিস এর ভিতরে পুষ্টিগুণ রয়েছে।

পেজ সূচিপত্রঃ- রাতে পানিতে ভেজানো খেজুর ও  কিশমিশ খেলে কী গুণ 

পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিসমিস

দিনে বা রাতে পানিতে ভেজানো খেজুর ও  কিশমিশ খেলে কী গুণ আমাদের অনেকেরই অজানে তাই আজকে  অজানা কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। তাহলে চলুন পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর কিসমিস কি গুন তা জেনে নেই। ডাক্তার ও পুষ্টিবিদেরা বলেন, অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুর ও কিশমিশ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। 
পানিতে ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ পানিসহ খেলে আরও দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। কী উপকারিতা রয়েছে, পানিতে ভেজানো খেজুর কিশমিশে তা একে একে স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নেই।

দুধে ভেজানো খেজুর ও কিসমিস খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা

  • ওজন নিয়ন্ত্রণঃ- খেজুর ও কিশমিশ প্রাকৃতিক শর্করাসমৃদ্ধ এবং শরীরে বাড়তি ক্যালরি যুক্ত করা ছাড়াই ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহযোগিতায় করে। তাই দীর্ঘক্ষণ সময় পেট ভরা রাখার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা হয়। খালি পেটে পানিতে খেজুর ও ভেজানো কিশমিশ খেলে দারুণ উপকার আশা করা যায়। 
  • রক্তস্বল্পতা দূরঃ- প্রচুর পরিমাণে লৌহ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সসমৃদ্ধ খেজুর ও কিশমিশ রক্তস্বল্পতা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা কপার রক্তের লোহিত কণার পরিমাণ বাড়ায়। হজমে সহায়তা করে খেজুর ও কিশমিশ আঁশসমৃদ্ধ তাই পানিতে ভিজিয়ে রাখার কারণে এটা প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে। 
ভেজানো কিশমিশ হজমের সমস্যা উন্নত করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে।রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে খেজুর ও কিশমিশ পটাশিয়ামসমৃদ্ধ, যা শরীরের লবণাক্ততার ভারসাম্য বজায় রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটা অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভালো উৎস যা রক্তনালির জৈব রসায়নে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটায়। 
দুধের সাথে মিশিয়ে এবং পানিতে ভিজিয়ে খেজুর ও কিসমিশ সেবণ বা খাইলে উপকার
ফলে রক্তচাপ হ্রাস পেতে পারে। শুধু তাই নয়, হাড়ের সুরক্ষা বোরন হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজন, যা খেজুর ও কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে থাকে এতে আরও রয়েছে। ক্যালসিয়াম ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট প্রতিদিন পানিতে ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ খাওয়া হাড় সুস্থ ও সুদৃঢ় রাখতে সাহায্য করে। তাই পানিতে ভিজানো খেজুর ও কিসমিস খাওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

  • মুখের দুর্গন্ধ দূরঃ- পানিতে ভিজানো খেজুর ও কিশমিশে আছে, অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও দুর্গন্ধ দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি কিশমিশ ভিটামিন বি এবং সি সমৃদ্ধ। তাই এই শুকনো ফলটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সম্ভাব্য সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। 
এর প্রদাহনাশক উপাদান জ্বর, সংক্রমণ ও অন্যান্য দুর্বলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। শক্তি জোগায় কিশমিশে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ কর্মশক্তি বৃদ্ধি পারে। পরিমিত খেজুর ও কিশমিশ খাওয়া দুর্বলভাব কমায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। খেজুর ও কিশমিশে আছে, কোলেস্ট্রেরল প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। 

খেজুর ও কিশমিশের দ্রবণীয় ফাইবার লিভার থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। খেজুর ও কিশমিশ অনিদ্রা দূর করার লক্ষ্যে অনেক ক্ষমতা রয়েছে, প্রচুর আয়রন, যা মানুষের অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে উত্তমরূপে কাজ করে। তাই প্রতিদিনই সকালে খালি পেটে ২/৪টি করে খেজুর ও কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

  • পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিশমিশ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা শিশুদের জন্য বিশেষ উপকারী। আবার মনোযোগ ও বুদ্ধির বিকাশ শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে দারুণ কাজ করে পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিশমিশ। 
এতে থাকা উপকারী উপাদান বোরন যেকোনো কাজে মনোযোগী হতে সাহায্য করে। মানসিক প্রশান্তি: কিশমিশে থাকা আয়রন গভীর ঘুমের জন্য বিশেষ উপকারী। তা ছাড়া নিয়মিত কিশমিশ খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে অবসাদ দূর হতে পারে, যা মানসিক প্রশান্তি আনতে দারুণ কাজ করে। নিয়মিত কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে অবসাদ দূর হয়।

পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর ও কিশমিশ ত্বকের যত্ন মিনারেল, ভিটামিন সি,ই আর কোলাজেন উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন বি৬ ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম এবং কপারের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে কিশমিশে। এছাড়াও এতে রয়েছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। যে কারণে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। 

সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও বাঁচায়। তাই নিয়মিত রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিংবা সকালেখেজুর ও কিশমিশ  খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও বলিরেখা মুক্ত। কালো, সোনালি, বাদামি, লাল যে রঙেরই পানিতে ভেজানো কিশমিশ আপনি রাতে খান না কেন, সবটাতেই উপকার মেলে। আধা কাপ ফুটানো স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে। 

৭ টি খেজুর ও কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। ৪ ঘন্টা পর ভিজে গেলে পানি সহ সে খেজুর ও কিশমিশ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেয়ে নিন। ব্যাস, এক সপ্তাহ পর আয়নায় আবিষ্কার করুন। আপনার লাবণ্যময় ত্বক দেখবেন কি ঝকঝকে এবং উজ্জ্বল তাই আসুন আমরা নিয়মিত সম্ভব হলে খেজুর ও কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করি আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। { আমিন}

খেজুর ও কিশমিশের উপকারিতা

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে অন্যতম উপকারী খাবার হচ্ছে শুকনো খাবার। আর এর মধ্যে আমাদের একটি অনেক পরিচিত  হচ্ছে খেজুর ও কিশমিশ। খালি মুখে বা পানি দিয়ে ভিজিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি পোলাও, পায়েসসহ বিভিন্ন রান্নায় খেজুর ও কিশমিশ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য সচেতনদের অনেকেই খেজুর ও কিশমিশ ভেজানো পানি পান করে থাকেন।
বিভিন্ন খাবারে খেজুর ও কিশমিশ যোগ করলে যেন খাবারের স্বাদও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এছাড়া চীনাবাদাম, আলমন্ড বা কাজুবাদামের মতো অন্য শুকনো খাবারের স্বাদ ভালো না লাগলে সেগুলোর সঙ্গে খেজুর ও কিশমিশ চিবিয়ে খেতে পারেন। তাতে মিলবে বাড়তি স্বাদ। আমাদের মধ্যে খেজুর ও কিশমিশ অনেক পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও এটির গুণাবলি অনেকেরই অজানা। 

শীতের সকালে খালি পেটে কিশমিশ খেলে কী হয়

তাই আজ জানুন খেজুর ও কিশমিশ খাওয়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় উপকারী খেজুর ও কিশমিশে ভালো মাত্রায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। আর এ উপাদানগুলো অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এগুলো সিস্টেম থেকে টক্সিন অপসারণের পাশাপাশি গাউট আর্থ্রাইটিস, কিডনিতে পাথর। 

এবং হৃদরোগের মতো জটিল রোগ প্রতিরোধেও অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে। রক্তস্বল্পতায় উপকারী খেজুর ও কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকে। এ কারণে এটি শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, কিশমিশে থাকা তামা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এবং হজমে উপকারী।

নিয়মিত কিছু পরিমাণে খেজুর ও কিশমিশ খেলে তা পেট ভালো রাখতে সহায়তা করতে পারে। এতে ভালো পরিমানে ফাইবার থাকার কারণে তা পানির উপস্থিতিতে ফুলে উঠতে শুরু করে আর পেটে রেচক প্রভাব দেয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ও ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারী খেজুর ও কিশমিশে ক্যাটেচিং নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। 

এটি শরীরকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আর অনেক সময় এ কার্যকলাপটি টিউমার এবং কোলন ক্যান্সারের কারণও হতে পারে। তাই সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে খেজুর ও কিশমিশে পলিফেনলিক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট নামের একটি উপাদান থাকে। এটি  মূলত একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। 

সেই সঙ্গে এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করায় তা জ্বরের ঝুঁকি কমাতে এবং ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কিশমিশ খেলে তা ঠাণ্ডা এবং অন্যান্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ত্বকের কোষকে যে কোনো ক্ষতি থেকে রক্ষা করেতে অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে খেজুর ও কিশমিশ। 

এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ, কোলাজেন এবং ইলাস্টিনের ক্ষতি থেকে ফ্রি র‌্যাডিকেল গুলোকে বাধা দেয়। এর ফলে এটি বলি, সূক্ষ্ম রেখা ও ত্বকে দাগ দেখা দেওয়ার সমস্যাসহ বার্ধক্যের লক্ষণ অনেকটা বিলম্ব করতে সহায়তা করে। এবং ওজন বৃদ্ধিতে উপকারী ওজন বাড়াতে চাইলে সেরা একটি উপায় হতে পারে খেজুর ও কিশমিশ খাওয়া। 

সকালে খেজুর ও কিশমিশ খেলে দূর হবে গ্যাস্ট্রিকসহ অনেক সমস্যা

যে সমস্ত ভাই ও বোনেরা প্রায়ই গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য প্রতিদিন খালি পেটে ভেজানো খেজুর ও কিশমিশ খাওয়া উচিত। এতে তাৎক্ষণিক সুবিধা পাবেন। খেজুর ও কিশমিশের পানিতে শীতল করার গুণ পাবেন। যা পেটে অ্যাসিড কমিয়ে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়। কিশমিশের পানি আরোগ্যের জন্য খুবই উপকারী। 
খেজুর ও কিসমিশের পানি খাওয়া উপকারী
এটিতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলে পেটের সমস্যা কমতে শুরু করে। কয়েক দিন খেলেই সুফল পেতে শুরু করবেন। তাহলে সম্ভব হলে অবশ্যই পানিতে ভিজানো খেজুর ও কিসমিস এর পানি অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করুন। দেখবেন দেহের সকল প্রকার সমস্যা দুর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

যেসব খাবার খাওয়ার আগে পানিতে ভেজালে বেশি লাভ

পুষ্টিবিদরা ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলছেন, এমন কিছু খাবারের কথা যেসব খাবার অত্যন্ত পুষ্টিকর। তবে খাওয়ার আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে তার গুণাগুণ আরও বেড়ে যায়। যেমনঃ-

ডালঃ- এমন খাবারের মধ্যে প্রথমেই বলা যায় ডালের কথা। প্রোটিন সমৃদ্ধ ডালের গুণ অনেকটাই বেড়ে যায় যদি তা রান্নার আগে চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা যায়। ভেজানো ডালের স্বাদ বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে পুষ্টিগুণ। সেই সঙ্গে ডালে থাকা রাসায়নিক পদার্থও বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ ঘটে।

চালঃ- ডালের মতো চাল ভিজিয়ে রাখলেও একই উপকার মেলে। সেই সঙ্গে যে লাভ হয় তা হলো গরমে ভিজিয়ে রাখা চালের ভাত বেশি সময় পর্যন্ত ভালো থাকে। এবং ভেজানো চাল থেকে ভাত তৈরি হলে ভাত আকারে একটু সরু মনে হয়।

বাদামঃ- বাদাম ভিজিয়ে রাখলেও এর পুষ্টি উপাদান বেড়ে যায়। তবে ডাল বা চালের মতো এই খাবার চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা পর্যাপ্ত নয়। বরং তা খাওয়ার আগে সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে পুষ্টিগুণ বাড়বে, সেই সঙ্গে হজমও হবে।

ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসিঃ- রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখা থেকে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তিসি পানিতে ভিজিয়ে খেলেই বেশি কার্যকরী।

খেজুর ও কিশমিশঃ- কিশমিশের পুষ্টিগুণের কথা নতুন করে বলার কিছু্ই নেই। তবে রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ সকালে খেলে এর পুষ্টিগুণ বেড়ে যায় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের কাছে অধিক পরিচিত বা চেনা দুটি খাবার একটি হচ্ছে খেজুর ওপরটি হচ্ছে কিসমিস। আর এই ফল বা খাবার সেমাই,পায়েস কিংবা ইফতারের প্লেটে কিসমিস ও খেজুর ছাড়া কেমন জানি মনে হয়। যে খাবার অসম্পূর্ণ তাই খেজুর ও কিসমিস আবার প্লেটে রাখলেই কেবলমাত্র খাবারের পূর্ণতা ফিরে পায়।

কিন্তু জানেন কি, খেজুর ও কিসমিস দুধে ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার উপকারিতা সেই ব্যাপারে আমাদের অনেকেরই অজানা তাই চলুন, আজকে অজানা কিছু তথ্য বা বিষয়বস্তু আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সুস্বাদু খেজুর ও কিসমিসের কিছু বিশেষ গুণাগুণ সমূহঃ-

  • খেজুর ও কিসমিস ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকেঃ- একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর ও কিসমিস খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই যাদের পরিবারে এই অস্বস্তি কর রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের রোজের ডায়েটে এই ফল ২টি থাকা অবশ্যই প্রয়োজন।
  • খেজুর ও কিসমিস অ্যাসিডিটির সমস্যা কমেঃ-খেজুর ও কিসমিসে উপস্থিত পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর রক্তে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমতে সময় লাগে না। এক কথায় সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে খেজুর ও কিসমিসের কোনো তুলনা হয় না।
  • খেজুর ও কিসমিস দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটেঃ- বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর ও কিসমিস খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়মিত এই ফল ২টির পাতা রস করে খাওয়া যায়। তাহলে শরীরের ভিতরের এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে রাতকানাসহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমাতে সাহয্য করে।
  • খেজুর ও কিসমিস অ্যানিমিয়ার রোগের প্রভাব কমাতে সাহায্য করেঃ- খেজুর ও কিসমিসে আছে, প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদনকে বাড়িতে দেয়। ফলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা কমতে থাকে।  নারীদের মধ্যে যে হারে অ্যানিমিয়ার ব্যাধি বাড়ছে, তাতে করে প্রত্যেকেরইখেজুর ও কিসমিস খাওয়ার প্রয়োজন।
  • খেজুর ও কিসমিস ব্রেন শক্তি বৃদ্ধি করঃ- খেজুর ও কিসমিস ডায়াটারি ফাইবার, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান বিদ্যামান। যার কারণে দেহের ভিতর প্রবেশ করার পর মস্তিস্কে কোষের ক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে দেই যে ব্রেন শক্তি বৃদ্ধি পায়। যদি বুদ্ধিমান হতে চান, তাহলে প্রতিদিন ২-৩টা করে খেজুর ও কিসমিস ভক্ষণ করুন।
  • খেজুর ও কিসমিস হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়ঃ- ডায়াটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর ও কিসমিস খেলে দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে। যার জন্য হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম আরও সব হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক বৃন্দ নিশ্চয় আপনারা পুরো আর্টিকেলটি পড়ার পরে উপলব্ধি করতে পেরেছেন, যে পানিতে ভিজিয়ে রেখে, এবং দুধের মধ্যে মিশ্রিত করে বা মিশিয়ে খেজুর ও কিসমিশ সেবন বা ভক্ষণ করলে আমাদের দেহের কত উপকারে আসে নিশ্চয়ই এ ব্যাপার গুলো বুঝতে পেরেছেন। তাই অনুরোধ করবো যদি আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়।

তাহলে আমরা প্রতিদিন হলেও দু চারটি করে খেজুর ও কিসমিশ পানিতে ভিজিয়ে অথবা শুকনো অথবা দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করব আমাদের সুস্থতার জন্য আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে তার নেয়ামত ভক্ষণ করার তৌফিক দান করুন। { আমিন}

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন