লাইলাতুল কদর অল্প আমলে বেশি সওয়াব বিস্তারিত জানুন

লাইলাতুল কদর অল্প আমলে বেশি সওয়াবপ্রিয় বন্ধুরা, অল্প সময়ে বেশি মুনাফা যদি হয়। কেমন হয় বলুন তো অথবা অল্প আমলে বেশি সওয়াব কারণ মনে চায়, আমি কি বলতে চাচ্ছি, আর্টিকেলের মূল কথাগুলো পড়েই বুঝতে পারছেন। 
সবে কদরের বিষয়
অর্থাৎ আজকে রাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে লাইলাতুল কদর যেটি হাজার মাসের চাইতেও উত্তম। এজন্যই শুরুতে বলা হয়েছে। অল্প আমলে বেশি সওয়াব তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যায়।

পেজ সূচিপত্রঃ- সবে-লাইলাতুল কদর অল্প আমলে বেশি সওয়াব

শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের সংক্ষিপ্ত বিবরণ 

শবে কদর {ফার্সিঃ-شب قدر} বা লাইলাতুল কদর {আরবিঃ-لیلة القدر}{এর অর্থ অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত} বা {পবিত্র রজনী} ফার্সি ভাষায় "শাব" ও আরবি ভাষায় "লাইলাতুল" অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী, অন্যদিকে ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহিমান্বিত। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হল ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা।

ইসলাম ধর্ম অনুসারে, এ রাতে ইসলাম ধর্মের ধর্ম প্রচারকারী মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত। কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহ এই রাত্রিকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। 

এবং এই একটি মাত্র রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক সওয়াব অর্জিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর মাহে রমজানে এই মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল কদর মুসলিমদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে মুসলিম সম্প্রদায় তা বিশ্বাস করে। শুধু তাই নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই রাতটিকে নিয়ে কুরআনুল কারীমে এরশাদ করেছেন।

 লাইলাতুল কদরে আল্লাহপাকের কাছে ক্ষমা চাওয়া

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ عَلِمْتُ أَىُّ لَيْلَةٍ لَيْلَةُ الْقَدْرِ مَا أَقُولُ فِيهَا قَالَ ‏ "‏ قُولِي اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি “লাইলাতুল কদর" জানতে পারি তাহলে সে রাতে কি বলব? তিনি বললেনঃ “তুমি বল, হে আল্লাহ! তুমি সম্মানিত ক্ষমাকারী, তুমি মাফ করতেই পছন্দ কর, অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও"{তিরমিজী হাদিস নং-৩৫১৩}

লাইলাতুল কদর পাওয়ার শ্রেষ্ঠ ও সহজ উপায়

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য ৩০ দিনেই ইতেকাফ করেছেন। এই ব্যাপারে একটি হাদিস বর্ণনা করা হলোঃ- আবূ সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদরী {রাযি:}এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমাদের সঙ্গে খেজুর বাগানে চলুন, (হাদীস সংক্রান্ত) আলাপ আলোচনা করব। 
লাইলাতুল কদর অল্প আমলে বেশি সওয়াব বিস্তারিত জানুন
তিনি বেরিয়ে আসলেন। আবূ সালামাহ (রাযি.) বলেন, আমি তাকে বললাম, ‘লাইলাতুল কাদর’ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যা শুনেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের প্রথম দশ দিন ‘ইতিকাফ করলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে ই’তিকাফ করলাম। 
জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী দশদিন ই‘তিকাফ করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করলাম। পুনরায় জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর রমাযানের বিশ তারিখ সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুত্বা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন। 

যারা আল্লাহর নবীর সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছেন, তারা যেন ফিরে আসেন (আবার ই‘তিকাফ করেন) কেননা, আমাকে স্বপ্নে লাইলাতুল কাদ্র’ অবগত করানো হয়েছে। তবে আমাকে তা (নির্ধারিত তারিখটি) ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় তারিখে। স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি কাদা ও পানির উপর সিজদা্ করছি। 

তখন মসজিদের ছাদ খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা আকাশে কোন কিছুই (মেঘ) দেখিনি, একখন্ড হালকা মেঘ আসল এবং আমাদের উপর (বৃষ্টি) বর্ষিত হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এমন কি আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কপাল ও নাকের অগ্রভাগে পানি ও কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। 

এভাবেই তাঁর স্বপ্ন সত্যে রূপ লাভ করল। তাহলে এই হাদিস থেকে বোঝা যায়। যে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর পাওয়ার লক্ষ্যে পুরো ৩০দিন ইতেকাফ করেছিলেন। তাই আমরাও লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পেতে হলে পুরো ৩০ দিন ইতেকাফ করার চেষ্টা করব, তাহলেই শবে কদর পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।

প্রতি ইবাদত বন্দেগির কোনো না কোনো রহস্য খুঁজে পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি শবে কদরেরও একটু রহস্য রয়েছে। আর সেই রহস্য বা বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ তায়ালা। রাসুলুল্লাহ {সাঃ} সাহাবীদেরকে বলেন, তোমরা জেনে রাখো, শরীরের ভেতরে একটি মাংসখণ্ড আছে।

সেটি পরিশুদ্ধ হলে পুরো শরীরটাই পরিশুদ্ধ হয়ে যায়। আর সেটি মন্দ হয়ে গেলে পুরো শরীরটাই মন্দ হয়ে যায়। আর জেনে রাখো, সেটি হলো কলব। (বুখারি হাদিস) হাদিস থেকে আরও জানা যায়, হজরত উবাদা ইবনুস সামি {রাঃ} বলেন, নবীজি {সাঃ} আমাদের লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অবগত করার উদ্দেশ্যে বের হন। পথে দুজন ঝগড়াঝাঁটিতে লিপ্ত হয়। 

তখন নবীজি (সাঃ) বলেন, আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানানোর জন্য বের হয়েছিলাম কিন্তু তখন অমুক অমুক বিবাদে লিপ্ত থাকায় তা (লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট তারিখ) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।  হয়তো এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তোমরা তা অনুসন্ধান করো রোজার বেজোড় রাতেআল্লাহ পাক আমাদের বোঝার তৌফিক দান করুন।

ইতেকাফ বলতে কি বুঝি তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা

ইতেকাফ একটি ইসলামিক আমল, যা মুসলিম ব্যক্তিরা সালাত ও আল্লাহর সাথে আত্মীয়তা অর্জনের জন্য করে। এটি একটি ধর্মীয় প্রথা, যা মুসলিম সমাজে প্রচলিত। ইতেকাফে একজন ব্যক্তি একটি মসজিদে বা একটি ধর্মীয় স্থানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বসে থাকে এবং প্রায় সম্পূর্ণ সময় আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে। এটি সাধারণভাবে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনে করা হয়। 
যখন মুসলিমরা আল-কুরআন নামক পবিত্র গ্রন্থের নাজিল হওয়ার সময়ে আল্লাহর সাথে আত্মীয়তা অর্জন করতে চায়। ইতিকাফ আরবি শব্দ, যা অবস্থান করা, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা অর্থে। ইসলামি পরিভাষায়, ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন, তাঁকে মুতাকিফ বলে।

ইতিকাফ হলো আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থাকার উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করা। রমজান মাসে প্রকৃত সাফল্য অর্জনের জন্য বিশেষভাবে যেসব ইবাদতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। ইতিকাফ তার মধ্যে অন্যতম। ইতিকাফ মানুষকে ঝামেলা ত্যাগ করার শিক্ষা দেয়, এবং অল্প সময়ের জন্য হলেও আল্লাহর সঙ্গে তার সম্পর্ক জুড়ে দেয়।

সুরা কাওসারে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে

সুরা কাওসার পবিত্র কোরআনের ১০৮তম সুরা। এই সুরাতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ-
  • মুহাম্মদ {সাঃ} কে নাম নিশানাহীন হতভাগ্যঃ- এই সুরাতে আল্লাহ বলেন যে মুহাম্মদ {সাঃ} এর শত্রুরা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রূপ করলে তাঁকে প্রচুর কল্যাণ দান করা হয়েছে এবং তিনি তাঁর প্রভুর উদ্দেশে নামাজ পড়ুন। প্রকৃতপক্ষে তাঁর শত্রুরাই নাম নিশানাহীন হতভাগ্য।
  • মুহাম্মদ {সাঃ} এর শিশুপুত্র মারা যাওয়ার পর কাফেররা তাঁর ওই কষ্টকর সময়ে আনন্দ করেছিল এবং বলাবলি করছিল। মুহাম্মদ {সাঃ} এবার নির্বংশ হয়ে গেল। সাধারণত পুত্রের মাধ্যমে বংশধারার সম্মান, ঐতিহ্য চলমান থাকে।
  • নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নামাজ হলো শুকরিয়া আদায় ও প্রতিদানের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। এই নামাজ পড়তে হবে শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য। লোক দেখানোর জন্য নয়। আল্লাহ তার অনুগ্রহ ও উপহার দেওয়ার কথা বলার পর দ্বিতীয় আয়াতে বলেছেন, "সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ পড়ো ও কোরবানি দাও।

 ইতিকাফ করার নিয়ম তিনটি প্রকারে বিভক্ত হয়

  • ওয়াজিব ইতিকাফঃ যদি কেউ কোন কারণে ইতিকাফের মান্নত করে, তাহলে তার ওপর ওই মান্নত পূরণার্থে ইতিকাফ করা ওয়াজিব।
  • সুন্নত ইতিকাফঃ রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়াহ।
  • মুস্তাহাব ইতিকাফঃ ওয়াজিব ও সুন্নত ইতিকাফ ছাড়া অপর ইতিকাফকে মুস্তাহাব ও নফল ইতিকাফ বলা হয়।
ইতিকাফ হচ্ছে, আল্লাহর ঘরে আল্লাহর সঙ্গে সময় কাটানো, যাতে আমরা আল্লাহর ইবাদত করতে পারি। এটি রমজান মাসের শেষ ১০ দিন মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি করাকেই ইতিকাফ বলা হয়। ইতিকাফ অর্থ নিজেকে আবদ্ধ করা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখাকেই বোঝায়।

এই রাতেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনে নাজিল করেছেন। সূরা আল কদর নামে কোরআন শরীফে একটি সূরা দিয়েছেন। যেখানে এই পবিত্র রাত সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। শবে কদর সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি, লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জানো, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। {সুরা কদর, আয়াত নং-১-৩}

রমজানের ২৭ তারিখ ই যে শবে কদর হবে তা নয়। নবী করিম (সা) বলেছেন, তোমরা শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর অনুসন্ধান করো। অর্থাৎ রমজান মাসের ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ তারিখে এই মহিমান্বিত রাত তালাশের কথা বলা হয়েছে। আয়িশা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। এবং বলেছেন তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। {সহীহ বুখারী}

শবে কদরের রাতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সালাতুত তাসবিহ 

সালাতুত তাসবীহ হলো একটি ঐচ্ছিক নামাজ যা মুসল্লীরা পড়তে পারেন। এই নামাজে তাসবিহের নামে পরিচিত। তাসবিহ পড়ার সময়, মুসল্লী সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার এই শব্দগুলো পড়ে। এটি জীবনের ছোট, বড়, স্বেচ্ছায়, অনিচ্ছায়, নতুন, পুরনো, গোপন, প্রকাশ্য সব রকম গুনাহ মাফ হয়ে যায়। 
শবে কদরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল হল
এটি প্রতি রাকাতে ৭৫ বার পড়তে হয়। সালাতুত তাসবীহ একটি উচ্চারণ ছালাত হয়, যা মুসল্লীরা প্রতি রাকাতে পড়তে পারেন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে এই গুরুত্বপূর্ণ নামাজটি শবে কদরের রাতে বা অন্যান্য রাত্রে জীবনে একবার হলেও পড়ার তৌফিক দান করুন।{ আমীন}

শবে কদরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল হল

শবে কদর বা লাইলাতুল কদর এর অর্থ হলো “অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত” বা “পবিত্র রজনী” এই রাতে মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত হয়। এই রাতে আমল করে মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। আল্লাহ এই রাতে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। এবং এই একটি মাত্র রজনীর ইবাদত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
  • তাহিয়্যাতুল অজু, দুখুলিল মাসজিদয, আউওয়াবিন, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।
  • কোরআন মাজীদ বা শরিফ তেলাওয়াত  পড়া।
  •  বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা ।
  • তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা।
  • দোয়া-কালাম, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা।
  • কবর জিয়ারত করা মৃত্যুর পূর্বে শান্তিপূর্ণ মৃত্যুর জন্য দোয়া করা।
  • দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সব মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
ফিতরা হলো একটি সাদকা বা চারিত্রিক দান, যা ঈদের নামাজের আগে অসহায়, গরিব, দুঃখী ব্যক্তিদের দেয়া হয়। এটি অসহায় গরিব-দুঃখীদের ন্যয্য পাওনা। এবং ঈদের আনন্দ উৎসবের জন্য একটি নির্দিষ্ট সাদকা। রমজানের রোজা ছাড়ার কারণে ফিতরা আদায় করতে হয়। এটি মানুষের পালণীয় রোজার যাবতীয় খতগুলো থেকে আত্মশুদ্ধি ও আত্মার আমলকে নির্মল করার জন্য। 

অসহায়দের মাঝে দেয়া আবশ্যক। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য ফিতরা আদায় করা হয়। এই সাদকাহ আদায় করতে হয়। যাতে আল্লাহ মেহেরবানী করে তার বান্দাদের দীর্ঘ এক মাস মহামূল্যবান ফরজ ইবাদত রোজা রাখার তাওফিক দান করে।

ফিতরা বা সাদাকাতুল ফিতর হলো সেই নির্ধারিত সাদকা, যা ঈদের নামাজের আগে অসহায়, গরিব, দুঃখী ব্যক্তিদের দেওয়া হয়। এটিকে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়। ঈদের দিন সকালেও যদি কারো কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ {যেমনঃ- সোনা, রুপা, ব্যবসাপণ্য} থাকে, 

তবে তাকে তাঁর নিজের ও পরিবারের ছোট-বড় সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। ফিতরা প্রদান করার মাধ্যমে অসহায় লোকদের ঈদের দিন সকালে খাদ্য গ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়।

ফিতরা আদায় করার নিয়ম কানুন

ফিতরা বা ফেতরা (আরবি শব্দ) ইসলামে যাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরের সদকা) নামে পরিচিত। ফিতর, ফেতরা বা ফাতুর বলতে খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয়। যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন। যাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে। 

রোজা বা উপবাস পালনের পর সন্ধ্যায় ইফতার বা খাদ্য গ্রহন করা হয়। সেজন্য রমজান মাস শেষে এই দানকে যাকাতুল ফিতর আহারের যাকাত বলা হয়। নারী-পুরুষ, স্বাধীন-পরাধীন, শিশু-বৃদ্ধ, ছোট-বড় সকল মুসলিমের জন্য ফিতরা প্রদান করা ওয়াজিব।
 
ইবনে উমর (রাঃ) থেকে জানা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক স্বাধীন-ক্রিতদাস, নারী-পুরুষ, ছোট-বড় মুসলমানের যাকাতুল ফিতর ফরজ করেছেন। এক ‘সা’ পরিমাণ খেজুর বা যব। তিনি লোকদেরকে ঈদের নামাযে বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার আদেশ দিয়েছেন। ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। 

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক আজকের বিষয় ছিল। লাইলাতুল কদর অল্প আমলে বেশি সওয়াব সম্বন্ধে আশা করি পুরো এই আর্টিকেলটি পড়ে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অল্প কিছু হলেও  উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে কোরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। {আমীন} 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন