ঈদের দিনের _করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ইসলামিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমলপ্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা ঈদের_দিনের_করণীয়
সম্পর্কে ঈদের দিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। যা আমরা জানি না। তাই ঈদের
দিনের করণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল সম্পর্কে জানব যা আটিকেলে উল্লেখ করা
হবে।
আশা করি এবাদতের ক্ষেত্রে আমাদের এই অজানা জিনিসগুলো অত্যন্ত আমলের ক্ষেত্রে কাজে
লাগবে, তাহলে চলুন আর বিলম্ব না করে ঈদের দিনের করণীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো জেনে
নিন। আশা করি এই আমল গুলো দিন ও আখিরাতের পুঁজি হবে, ইনশাল্লাহ!
পেজ কন্টেন্ট সূচিপত্রঃ- ঈদের_দিনের_করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে
- ঈদ কি?
- ঈদের দিন গোসল করা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া
- সর্বোত্তম পোশাক পরিধান ও সাজসজ্জা গ্রহণ করা
- ছাদাক্বাতুল ফিতর প্রদান করা
- কিছু খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া
- তাকবীর পাঠ করা
- ঈদের জামা‘আতে মহিলাদের অংশগ্রহণ করা
- ঈদগাহে গমনাগমনে পথ পরিবর্তন করা
- পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন করা
- ময়দানে ছালাত আদায় করা
- সুন্নাতী পদ্ধতিতে পরস্পরে কুশল বিনিময় করা
- শেষ কথা
ঈদ কি?
ঈদ শব্দটির অর্থ হলো উৎসব বা আনন্দ। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব
গুলোকে ঈদ বলা হয়। পবিত্র রমজানে ১ মাস রোজা বা সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের
২ তারিখে খুশী উদযাপনকে ঈদ-উল-ফিতর বলা হয়। তাই এই ঈদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ
আমল আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।
ঈদের দিন গোসল করা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া
ঈদের দিন প্রত্যুষে ওযূ ও গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা অর্জন করত ঈদগাহে
গমন করা মুস্তাহাব। হাদীছে এসেছে- নাফে‘ থেকে বর্ণিত,
أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَغْتَسِلُ يَوْمَ الْفِطْرِ قَبْلَ
أَنْ يَغْدُوَ إِلَى الْمُصَلَّى
‘নিশ্চয় আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ঈদুল ফিতরের দিন প্রত্যুষে
ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। {মুওয়াত্তা মালেক, হাদিস নং- ৬০৯ সনদ ছহীহ,
মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস নং- ৫৭৫৪}
সর্বোত্তম পোশাক পরিধান ও সাজসজ্জা গ্রহণ করা
পুরুষরা ঈদুল ফিতরের দিন সকালে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করে সুসজ্জিত হয়ে ঈদগাহের
উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ‘বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা নিয়ে ওমর (রাযিয়াল্লাহু
আনহু) আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে
বললেন,
আরো জানতে পড়ুনঃ রমজানের রোজা রাখার বিশেষ উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন
হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটি ক্রয় করে নিন। ঈদের সময় এবং প্রতিনিধি দলের সঙ্গে
সাক্ষাতের সময় এটি দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। {ছহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৯৪৮} এই
হাদীছ থেকে বুঝা যায়। ঈদের দিন সুসজ্জিত হওয়া যায়। {হাশিয়ায়ে সিন্দী লিন নাসাঈ,
৩য় খন্ড পৃষ্ঠা নং- ১৮১}
ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
كَانَ يَلْبَسُ يَوْمَ الْعِيْدِ بُرْدَةً حُمَرَاءَ ‘রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের দিন লাল চাদর পরিধান করতেন। {আলবানী,
সিলসিলা ছহীহাহ, হাদিস নং-১২৭৯}
মহিলারা অভ্যন্তরীণভাবে সুসজ্জিত হবে, তবে সুগন্ধি মেখে ও বাহ্যিক সৌন্দর্য
প্রদর্শনী করে বের হবে না। তারা বড় ওড়না বা চাদরে আবৃত হয়ে পর্দা সহকারে বের হবে।
কারো ওড়না বা চাদর না থাকলে অন্য কোন বোনের ওড়নায় বা চাদরে শামিল হয়ে বের
হবে।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
لِتُلْبِسْهَا صَاحِبَتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا ‘তার সাথী তাকে নিজের চাদর
দ্বারা আবৃত করে নিয়ে যাবে। {ছহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৩২৪; ছহীহ মুসলিম, হাদিস নং-
৮৯০}
ছাদাক্বাতুল ফিতর প্রদান করা
ঈদুল ফিতরের দিনে অন্যতম প্রধান কাজ হল, ফিতরা প্রদান করা। ছোট-বড়, নর-নারী,
স্বাধীন-পরাধীন (গোলাম) প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির[ছহীহ বুখারী, হাদিস নং-১৫১১
পক্ষ থেকে এক ছা‘ পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য ফিতরা হিসাবে আদায় করা ফরয। আবু সাঈদ খুদরী
(রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
আরো জানতে পড়ুনঃ রমজান মাসে কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত অত্যন্ত মহত্ত্বপূর্ণ
আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যুগে এক ছা‘ খাদ্য
দ্রব্য ফিতরা হিসাবে প্রদান করতাম। আর আমাদের খাদ্য দ্রব্য ছিল যব, কিশমিশ, পনীর
এবং খেজুর। {ছহীহ বুখারী, হাদিস নং- ১৫১০, ১৫০৯}
উল্লেখ্য যে, ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বেই ফিতরা আদায় করতে হবে।
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের মাঠে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
{ছহীহ বুখারী, হা/১৫০৯, ছহীহ মুসলিম, হা/৯৮৬} তবে ২/১ দিন পূর্বেও প্রদান করা
বৈধ। {ছহীহ বুখারী, হা/১৫১১}
কিছু খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া
ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ছালাতের জন্য ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে বিজোড় সংখ্যক খেজুর
কিংবা অন্য কিছু খেয়ে বের হওয়া সুন্নাত। পক্ষান্তরে ঈদুল আযহার দিনে কিছু না খেয়ে
বের হওয়া সুন্নাত। এটাই ছিল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর
আমল।
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَغْدُوْ يَوْمَ
الْفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ تَمَرَاتٍ وَيَأْكُلُهُنَّ وِتْرًا
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন (বাড়ি থেকে
ঈদগাহের উদ্দেশ্যে) বের হতেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি বিজোড় সংখ্যক খেজুর
খেতেন। {ছহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৯৫৩}
বুরায়দা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَخْرُجُ يَوْمَ
الفِطْرِ حَتَّى يَطْعَمَ
وَلَا يَطْعَمُ يَوْمَ الأَضْحَى حَتَّى يُصَلِّيَ ‘রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খেয়ে বের হতেন না।
এবং ঈদুল আযহার দিন ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না। {তিরমিযী, হা/৫৪২;
ইবনু মাজাহ, হা/১৭৫৬, সনদ ছহীহ}
তাকবীর পাঠ করা
ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া থেকে খুৎবা শুরুর পূর্ব
পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতে হয়।[মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল
{বৈরূতঃ ১৪০৫ হিজরি সন ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দ} ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা নম্বরঃ ১২৫} খত্বীব বা
ইমামের সাথে সাথে উপস্থিত সকলে সমস্বরে তাকবীর পাঠ করতে পারেন।
মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা নং ১২১
দারাকুৎনী, হাদিস নং- ১৬৯৬, ১৭০০} যুহরী (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, ‘নবী করীম
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে পৌঁছে ছালাত শেষ হওয়া
পর্যন্ত তাকবীর বলতেন।
যখন ছালাত আদায় করতেন, তারপর আর তাকবীর বলতেন না।[মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, ১ম
খণ্ড, পৃষ্ঠা নং- ৪৮৭ সিলসিলা ছহীহাহ, হাদিস নং- ১৭১, আলবানী বলেন, যদিও হাদীছটি
মুরসাল কিন্তু এর অনেকগুলো শাহেদ হাদীছ থাকার কারণে এটি ছহীহ আব্দুল্লাহ ইবনু
মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ঈদের তাকবীরে নিম্নোক্ত দু‘আ পড়তেন,
اَللّٰہُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ لَا إِ لٰہَ إِلَّا اللهَ وَ اللهُ
أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ وَ لِلهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ : ‘আল্ল-হু আকবার আল্লা-হু আকবার লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লাহু
আকবার আল্লা-হু আকবার ওয়া লিল্লা-হিল হাম্দ।{মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, হা/৫৬৯৭;
সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১২৫} উল্লেখ্য যে, মহিলারা নিঃশব্দে
তাকবীর পাঠ করবে।{তাফসীরে কুরতুবী, ২য় খ-, পৃ. ৩০৭, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২-৪; বায়হাক্বী,
৩য় খণ্ড, পৃ. ৩১৬}
ঈদের জামা‘আতে মহিলাদের অংশগ্রহণ করা
নারী-পুরুষ সকলের জন্য ঈদের ছালাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুরুষের পাশাপাশি স্বীয় উম্মতের সকল মুসলিম
মহিলাকে, এমনকি ঋতুবতী মহিলাদেরকেও ঈদের মাঠে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর
ঋতুবতীদেরকে শুধু খুৎবা শ্রবণ এবং মুখে তাকবীর, তাহলীল, আমীন আমীন বলার পরামর্শ
দিয়েছেন।
{[ছহীহ বুখারী, হা/৩৫১; মিশকাত, হা/১৪৩১} উল্লেখ্য যে, ঈদের জামা‘আতে পুরুষদের
পিছনে পর্দার সাথে মহিলাগণ প্রত্যেকে বড় চাদরে আবৃত হয়ে যোগদান করবেন। ঋতুবতী
মহিলাগণ কাতার থেকে সরে এক পার্শ্বে গিয়ে বসবেন এবং কেবল খুৎবা শ্রবণ করবেন ও
খত্বীবের সাথে দু‘আয় শরীক হবেন।{ছহীহ বুখারী, হা/৩৫১; মিশকাত, হা/১৪৩১}
ঈদগাহে গমনাগমনে পথ পরিবর্তন করা
ঈদগাহে পায়ে হেঁটে এক পথে যাওয়া এবং ভিন্ন পথে ফিরে আসা সুন্নাত। আবু হুরায়রা
(রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا خَرَجَ يَوْمَ
الْعِيْدِ فِىْ طَرِيْقٍ رَجَعَ فِىْ غَيْرهِ
‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের দিনে এক পথ দিয়ে যেতেন এবং
অন্য পথ দিয়ে ফিরে আসতেন।{তিরমিযী, হা/৫৪১; মিশকাত, হা/১৪৪৭, সনদ ছহীহ}
পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন করা
সুন্নাত হল- পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন করা। ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে
বর্ণিত, তিনি বলেন,كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْرُجُ إِلَى
الْعِيْدِ مَاشِيًا وَيَرْجِعُ مَاشِيًا
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন ও
প্রত্যাবর্তন করতেন। {ইবনু মাজাহ, হাদিস নং- ১২৯৫ সনদ হাসান}
তাই ঈদগাহ যদি নিকটবর্তী হয়, তাহলে পায়ে হেঁটে গমন করা সুন্নাহ। তবে ঈদগাহ যদি
অনেক দূরবর্তী হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে যানবাহনে করে গমন করাতে কোন সমস্যা নেই।
আল্লাহই অধিক অবগত।{ছহীহ ফিকহুস সুন্নাহ, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা নং- ৬০৫}
ময়দানে ছালাত আদায় করা
উন্মুক্ত ময়দানে ঈদের ছালাত জামা‘আত সহকারে আদায় করা সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও খুলাফায়ে রাশেদীন সর্বদা ঈদের ছালাত
উন্মুক্ত ময়দানে আদায় করতেন। তাঁদের ঈদের ময়দানটি ছিল মদীনার মসজিদে নববীর পূর্ব
দরজা বরাবর মাত্র পাঁচশ’ গজ (الف ذراع) দূরে ‘বাত্বহান’ সমতল ভূমিতে
অবস্থিত।{ফিক্বহুস সুন্নাহ, ১ম খ-, পৃ. ২৩৭-৩৮; মির‘আতুল মাফাতীহ, ২য় খণ্ড, পৃ.
৩২৭; ঐ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২২}
অন্যান্য মসজিদের চেয়ে এক হাযার গুণ বেশি নেকী এবং অতি নিকটবর্তী হওয়া সত্ত্বেও
তাঁরা কখনো মসজিদে নববীতে ঈদের ছালাত আদায় করেননি। একটি ‘যঈফ’ বর্ণনায় আছে যে,
তিনি একবার মাত্র বৃষ্টির কারণে মসজিদে নববীতে ঈদের ছালাত আদায় করেছিলেন।{যঈফ আবূ
দাঊদ, হা/১১৬০; মিশকাত, হা/১৪৪৮ সনদ ‘যঈফ}
দান-ছাদাক্বাহ করা
দান-ছাদাক্বাহ ঈদের দিনের অন্যতম নফল ইবাদত। এ দিনে দান-ছাদাক্বাহর গুরুত্ব এতই
বেশি যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই খুৎবা শেষ করে
বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে নিয়ে মহিলাদের নিকট যেতেন ও তাদেরকে দান-ছাদাক্বাহর
নির্দেশ দিতেন। মহিলারা নেকীর উদ্দেশ্যে নিজেদের গহনা খুলে বেলাল (রাযিয়াল্লাহু
আনহু)-এর হাতে দান করতেন।
একদা আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কখনও ঈদের ছালাতে উপস্থিত
ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হতেন (ও প্রথমে) ছালাত আদায় করতেন।
তারপর খুৎবা দিতেন। রাবী বলেন, তিনি আযান বা ইক্বামতের কথা উল্লেখ করেননি। অতঃপর
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদের নিকটে আসতেন, তাদেরকে
উপদেশ দিতেন ও দান-ছাদাক্বাহ করার নির্দেশ দিতেন।
আমি মহিলাদেরকে দেখতাম, তারা নিজেদের কান ও গলার দিকে হাত বাড়াতেন এবং গহনা খুলে
বেলালের নিকট দিতেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও
বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বাড়ী ফিরে আসতেন।{ছহীহ বুখারী, হা/৫২৪৯; মিশকাত,
হা/১৪২৯}
সুন্নাতী পদ্ধতিতে পরস্পরে কুশল বিনিময় করা
ঈদের দিন ছাহাবায়ে কেরাম পরস্পরে সাক্ষাৎ হলে বলতেন,
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ ‘তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।
অর্থাৎ ‘আল্লাহ আমাদের ও আপনার পক্ষ হতে কবুল করুন! {আলবানী, তামামুল মিন্নাহ, ১ম
খণ্ড, পৃ. ৩৫৪, সনদ হাসান; ছহীহ ফিকহুস সুন্নাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬০৮}
শেষ কথাঃ
সম্মানিত পাঠক এর বিষয় বস্তু ছিল অতীত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আশা
করি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি।
আর যদি না পড়ে থাকেন তাহলে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার আহ্বান জানিয়ে আপনাদের
সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই ইতি করছি। আল্লাহ হাফেজ!