স্মার্টফোনের ইন্টারনেট গতি বাড়ানোর বিশেষ কৌশল বিস্তারিত জানুন

স্মার্টফোনের ইন্টারনেট গতি বাড়ানোর বিশেষ কৌশলপ্রিয় বন্ধুরা আপনার স্মার্ট ফোনের গতি বৃদ্ধি করা নিয়ে টেনশনে রয়েছেন। আর টেনশন নাই, আর কোন হতাশার কারণ নেই। আপনাদের ফোনের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য আজকে আর্টিকেল যেটির ফলো করলে আপনার স্মার্টফোনের সকল সমস্যা সমাধানসহ।
স্মার্টফোনের ইন্টারনেট গতি বাড়ানোর বিশেষ কৌশল বিস্তারিত জানুন
ইন্টারনেট গতি এক কথায় সকল সমস্যার সমাধানের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করবে তাহলে চলন বিলম্ব না করে স্মার্ট ফোনে যাবে তুইও সমস্যা এবং দিকনির্দেশনা নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি শুরু করা যাক। 

ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ হয়ে উঠেছে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য, ইন্টারনেটের গতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এটি আমাদের অনলাইন কার্যকলাপের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। 

দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার, ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন শপিং বা কোনো জরুরি তথ্য অনুসন্ধান করতে পারি না। তবে, অনেক সময় স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে, যা আমাদের কাজের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটায়। 

ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে ফোনের অভ্যন্তরীণ সেটিংস, নেটওয়ার্কের সমস্যা, বা অন্য কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা। এ কারণে, স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর কিছু কৌশল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 
এই নিবন্ধে, আমরা কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় আলোচনা করব, যেগুলো মেনে চললে স্মার্টফোনের ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো সম্ভব।

স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর জন্য কয়েকটি কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে যা ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে। তাই নীচে কিছু কার্যকর উপায় উল্লেখ করা হলো:

পেজ সূচিপত্রঃ- স্মার্টফোনের ইন্টারনেট গতি বাড়ানোর বিশেষ কৌশল

  • স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি কি?
  • ব্রাউজারের ক্যাশে ক্লিয়ার
  • অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ
  • ডেটা সেভার মোড ব্যবহার
  • অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার বন্ধ
  • ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু
  • ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতি
  • আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
  • আরও অন্যান্য বিষয়
  • সর্বশেষ কথা

স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি কি?

স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি বলতে ডেটা ডাউনলোড এবং আপলোড করার ক্ষমতার পরিমাপকে বোঝায় যা আপনার মোবাইল ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময় অভিজ্ঞতা করেন। এই গতি কিলোবাইট প্রতি সেকেন্ড (Kbps), মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড (Mbps), বা গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ড (Gbps) হিসেবে মাপা হয়। ইন্টারনেটের গতি নির্ভর করে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরের ওপর:
স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি
**নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি:** 3G, 4G, এবং 5G: নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 3G এর তুলনায় 4G দ্রুত এবং 5G তার থেকেও অনেক দ্রুত। 5G নেটওয়ার্ক ডাউনলোড স্পিড ১০০ গুন পর্যন্ত দ্রুত হতে পারে 4G এর তুলনায়।
  
**নেটওয়ার্ক কভারেজ:** যদি আপনি এমন কোনো জায়গায় থাকেন যেখানে নেটওয়ার্ক কভারেজ দুর্বল, তবে আপনার ইন্টারনেটের গতি কম হতে পারে। সুতরাং, আপনার অবস্থান এবং নেটওয়ার্ক কভারেজের শক্তি ইন্টারনেট গতি প্রভাবিত করতে পারে।

**নেটওয়ার্ক ট্রাফিক:** নেটওয়ার্কে একসাথে অনেক ব্যবহারকারী থাকলে ইন্টারনেটের গতি ধীর হতে পারে। বিশেষ করে পিক আওয়ার সময় বা জনবহুল এলাকায় এটি আরও বেশি ঘটে।

*ফোনের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার:* স্মার্টফোনের প্রসেসর, RAM, এবং অপারেটিং সিস্টেম ইন্টারনেটের গতির ওপর প্রভাব ফেলে। একটি শক্তিশালী প্রসেসর এবং পর্যাপ্ত RAM স্মার্টফোনের পারফরম্যান্স বাড়ায় এবং ইন্টারনেট ব্রাউজিংকে আরও দ্রুত করে তোলে।

**ব্রাউজার এবং অ্যাপ্লিকেশন অপটিমাইজেশন:**
ইন্টারনেটের গতি ব্রাউজার এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলির অপটিমাইজেশনের উপরও নির্ভর করে। কিছু ব্রাউজার বা অ্যাপ্লিকেশন বেশি ডেটা ব্যবহার করে এবং ধীর গতি অনুভব হতে পারে।

**DNS সার্ভার:** আপনার ফোন যে DNS (Domain Name System) সার্ভার ব্যবহার করে তার প্রভাবেও ইন্টারনেটের গতি প্রভাবিত হতে পারে। কখনও কখনও একটি দ্রুত DNS সার্ভার ব্যবহার করলে ব্রাউজিং গতি বাড়ানো যায়।

**ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার:** অনেক অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করে থাকে, যা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয়। ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখলে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো যায়।

স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি নিশ্চিত করতে হলে এসব বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে হলে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, ভাল হার্ডওয়্যার, এবং অপটিমাইজড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা উচিত। একই সঙ্গে নিয়মিত ক্যাশে ক্লিয়ার করা, ডেটা সেভার মোড ব্যবহার করা, এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিৎ।

ব্রাউজারের ক্যাশে ক্লিয়ার 

ব্রাউজারের ক্যাশে ক্লিয়ার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা ইন্টারনেট ব্রাউজিংকে দ্রুত করতে সহায়ক। ক্যাশে হল ব্রাউজার দ্বারা সাইট লোডিংয়ের সময় ব্যবহৃত ডেটা, যেমন ছবি, স্ক্রিপ্ট, এবং অন্যান্য ফাইল, যা ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সহায়ক হয়। 

তবে, সময়ের সাথে সাথে ক্যাশে জমা হয়ে ব্রাউজারের পারফরম্যান্স কমিয়ে দিতে পারে। নিচে বিভিন্ন ব্রাউজারের জন্য ক্যাশে ক্লিয়ার করার উপায় দেওয়া হলো:- গুগল ক্রোম (Google Chrome)
  • ক্রোম চালু করুন:- গুগল ক্রোম ব্রাউজার খুলুন।
  • **মেনুতে যান:** উপরের ডানদিকে থাকা তিনটি ডট আইকনে ক্লিক করুন।
  • ***Settings নির্বাচন করুন:*** মেনু থেকে "Settings" অপশনটি সিলেক্ট করুন।
  • *Privacy and Security:* বাম দিকে থাকা "Privacy and security" বিভাগে যান।
  • Clear browsing data: "Clear browsing data" অপশনে ক্লিক করুন।
  • Time range নির্বাচন করুন: পপ-আপ উইন্ডো থেকে "Time range" সিলেক্ট করুন (যেমন, Last hour, Last 24 hours, All time)।
  • ***Cached images and files নির্বাচন করুন*** "Cached images and files" চেকবক্সটি সিলেক্ট করুন।
  • **Clear data ক্লিক করুন:** "Clear data" বোতামে ক্লিক করে ক্যাশে ক্লিয়ার করুন।
*মোজিলা ফায়ারফক্স (Mozilla Firefox):*
  1. ফায়ারফক্স চালু করুন: মোজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজার খুলুন।
  2. মেনুতে যান:- উপরের ডানদিকে থাকা তিনটি হরাইজন্টাল লাইন আইকনে ক্লিক করুন।
  3. Settings নির্বাচন করুন: মেনু থেকে "Settings" অপশনটি সিলেক্ট করুন।
  4. **Privacy & Security:** বাম দিকে থাকা "Privacy & Security" বিভাগে যান।
  5. **Cookies and Site Data:** নিচে স্ক্রল করে "Cookies and Site Data" অংশে যান।
  6. **Clear Data ক্লিক করুন:** "Clear Data" বোতামে ক্লিক করুন।
  7. **Cached Web Content নির্বাচন করুন:** "Cached Web Content" চেকবক্সটি সিলেক্ট করুন।
  8. *Clear ক্লিক করুন:* "Clear" বোতামে ক্লিক করে ক্যাশে ক্লিয়ার করুন।

**সাফারি (Safari) (ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য):**

  • *সাফারি চালু করুন:* সাফারি ব্রাউজার খুলুন।
  • *Safari মেনুতে যান:* উপরের মেনু বার থেকে "Safari" সিলেক্ট করুন।
  • Preferences নির্বাচন করুন "Preferences" এ ক্লিক করুন।
  • Advanced ট্যাব সিলেক্ট করুন "Advanced" ট্যাবে যান।
  • **Show Develop menu in menu bar নির্বাচন করুন:** "Show Develop menu in menu bar" চেকবক্সটি চেক করুন।
  • Develop মেনুতে যান: মেনু বারে "Develop" অপশনে ক্লিক করুন।
  • *Empty Caches নির্বাচন করুন:* "Empty Caches" অপশনে ক্লিক করে ক্যাশে ক্লিয়ার করুন।
**মাইক্রোসফ্ট এজ (Microsoft Edge):**
  1. এজ চালু করুনঃ- মাইক্রোসফ্ট এজ ব্রাউজার খুলুন।
  2. মেনুতে যান: উপরের ডানদিকে থাকা তিনটি ডট আইকনে ক্লিক করুন।
  3. ***Settings নির্বাচন করুন*** মেনু থেকে "Settings" অপশনটি সিলেক্ট করুন।
  4. **Privacy, search, and services:** বাম দিকে থাকা "Privacy, search, and services" বিভাগে যান।
  5. Clear browsing data: "Clear browsing data" এর অধীনে "Choose what to clear" এ ক্লিক করুন।
  6. Time range নির্বাচন করুন: পপ-আপ উইন্ডো থেকে "Time range" সিলেক্ট করুন।
  7. Cached images and files নির্বাচন করুন "Cached images and files" চেকবক্সটি সিলেক্ট করুন।
  8. *Clear now ক্লিক করুন:* "Clear now" বোতামে ক্লিক করে ক্যাশে ক্লিয়ার করুন।
নিয়মিতভাবে ব্রাউজারের ক্যাশে ক্লিয়ার করা ব্রাউজারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং আপনার ডিভাইসে ফ্রি স্পেস তৈরি করতে সহায়ক। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন আপনি ওয়েব পেজ লোড করতে ধীরগতি অনুভব করেন বা ব্রাউজারের আচরণ অপ্রত্যাশিত হয়ে ওঠে।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ

স্মার্টফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করার মাধ্যমে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো, ডেটা সাশ্রয়, এবং ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করা সম্ভব। অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে ডেটা ব্যবহার করে, যা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয় এবং ফোনের পারফরম্যান্স প্রভাবিত করে। নিচে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করার উপায় দেওয়া হলো

***অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করার পদ্ধতিঃ-
  • *সেটিংসে যান:* আপনার ফোনের "Settings" অ্যাপে প্রবেশ করুন।
  • ** অ্যাপস বা অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজার নির্বাচন করুন: Apps" বা "Applications (অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজার) অপশন খুঁজে বের করুন এবং এতে ক্লিক করুন।
  • *চলমান অ্যাপগুলো দেখুন:* "Running" বা "Running Services" অপশনে ক্লিক করে দেখতে পারবেন কোন কোন অ্যাপ বর্তমানে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলছে।
  • অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ নির্বাচন করুন:- ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি নির্বাচন করুন।
  • *ফোর্স স্টপ ক্লিক করুন: "Force Stop" বাটনে ক্লিক করে অ্যাপটি বন্ধ করে দিন। এটি অ্যাপটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে আর চলবে না।
  • **অ্যাপ ডাটা ক্লিয়ার করুন (ঐচ্ছিক):** যদি অ্যাপটি ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে "Clear Data" অপশন সিলেক্ট করে অ্যাপের সমস্ত ডেটা মুছে ফেলতে পারেন।
**আইফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করার পদ্ধতি:**
  1. **হোম বোতামে ডাবল প্রেস করুন (iPhone X বা তার আগে):**
  2. iPhone X বা তার আগে থাকা মডেলগুলিতে, হোম বোতামটি দুইবার চাপুন।
  3. **অ্যাপ সুইচার খুলুন (iPhone X বা তার পরে):** iPhone X বা পরবর্তী মডেলগুলিতে, হোম স্ক্রিনের নীচ থেকে উপরে সোয়াইপ করুন এবং স্ক্রিনের মাঝখানে এক সেকেন্ড ধরে রাখুন।
  4. **অ্যাপ কার্ডগুলি দেখুন:** ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অ্যাপগুলোর কার্ডগুলি স্ক্রিনে প্রদর্শিত হবে।
  5. **অ্যাপ বন্ধ করুন:** অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের কার্ডটি উপরের দিকে সোয়াইপ করুন। এটি অ্যাপটি বন্ধ করে দেবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে আর চলবে না।

### **উপকারিতা:**###

  • **ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি:** অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করলে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার কমে যায়, যা ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে সহায়ক।
  • **ব্যাটারি লাইফ বাড়ায়:** ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ কম চালালে ব্যাটারি বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়।
  • *ফোনের পারফরম্যান্স উন্নত হয়:* অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করলে ফোনের প্রসেসর এবং মেমোরি ফ্রি থাকে, যা ফোনকে দ্রুতগতির করে তোলে।
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করা স্মার্টফোনের ইন্টারনেটের গতি, ব্যাটারি লাইফ, এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্স উন্নত করার একটি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায়। নিয়মিতভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ রাখা একটি ভাল অভ্যাস, বিশেষত যখন আপনি দ্রুত ইন্টারনেট এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ পেতে চান।

ডেটা সেভার মোড ব্যবহার 

ডেটা সেভার মোড একটি কার্যকর বৈশিষ্ট্য যা স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ডেটা খরচ কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলির ডেটা ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে এবং শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ডেটা অ্যাক্সেস করতে দেয়,
ডেটা সেভার মোড ব্যবহার
যা ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে এবং ব্যাটারি জীবন দীর্ঘায়িত করতে পারে। নিচে ডেটা সেভার মোড ব্যবহারের উপায় এবং এর উপকারিতা আলোচনা করা হলো:
*অ্যান্ড্রয়েডে ডেটা সেভার মোড চালু করার পদ্ধতি:*
**সেটিংসে যান:**
  • আপনার ফোনের "Settings" অ্যাপে যান।
 **নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট নির্বাচন করুন:**
  • "Network & Internet" বা "Connections" অপশনটি নির্বাচন করুন।
**ডেটা ব্যবহার (Data Usage) নির্বাচন করুন:**
  • "Data Usage" অপশনটি নির্বাচন করুন।
**ডেটা সেভার (Data Saver) অপশনে যান:**
  • "Data Saver" অপশনে ক্লিক করুন।
**ডেটা সেভার মোড চালু করুন:**
  • ডেটা সেভার অপশনের পাশে থাকা সুইচটি টগল করে "On" করে দিন। 
**ব্যতিক্রম অ্যাপ্লিকেশন যোগ করুন (ঐচ্ছিক):**
  • কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করতে হলে, "Unrestricted Data" অপশন থেকে নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনগুলো সিলেক্ট করতে পারেন।
আইফোনে ডেটা সেভার মোড চালু করার পদ্ধতি:
  • ***সেটিংসে যানঃ-*** আপনার iPhone এর "Settings" অ্যাপে যান।
  • **মোবাইল ডেটা নির্বাচন করুন:** "Mobile Data" বা "Cellular" অপশনটি নির্বাচন করুন।
  • **মোবাইল ডেটা অপশন (Mobile Data Options) নির্বাচন করুন:** "Mobile Data Options" এ যান।
  • **লো ডেটা মোড (Low Data Mode) চালু করুন:** "Low Data Mode" অপশনের পাশের সুইচটি টগল করে "On" করে দিন।

**ডেটা সেভার মোডের উপকারিতা**

ডেটা ব্যবহার কমায়: ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ডেটা ব্যবহার সীমিত করে, ফলে ডেটা খরচ কম হয়।
ইন্টারনেটের গতি বাড়ায়: ব্যাকগ্রাউন্ডে কম ডেটা ব্যবহার হলে, ফ্রন্টগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি পায়।
ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করে:- ডেটা সেভার মোড ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ ব্যবহার কমিয়ে ফোনের ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
সীমিত ডেটা প্ল্যানে সহায়ক: যারা সীমিত ডেটা প্ল্যান ব্যবহার করেন, তাদের জন্য ডেটা সেভার মোড একটি কার্যকর সমাধান, কারণ এটি ডেটার অপচয় কমায়।

ডেটা সেভার মোড স্মার্টফোনে ডেটা ব্যবহারের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং অপ্রয়োজনীয় ডেটা খরচ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এটি ইন্টারনেটের গতি উন্নত করে এবং ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়ক। যারা নিয়মিত ডেটা খরচ কমাতে চান বা সীমিত ডেটা প্ল্যান ব্যবহার করেন, তাদের জন্য ডেটা সেভার মোড ব্যবহার করা অত্যন্ত উপকারী।

অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার বন্ধ

অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার বন্ধ করা স্মার্টফোনের ইন্টারনেট গতি বাড়াতে এবং ডেটা খরচ কমাতে সহায়ক হতে পারে। বেশিরভাগ স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করে থাকে, যা প্রায়ই অপ্রয়োজনীয় হয়।

এবং আপনার ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ এবং ডেটা প্ল্যানের ব্যবহার বাড়িয়ে তোলে। ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা আরোপ করে, আপনি ইন্টারনেটের গতি উন্নত করতে পারেন। নিচে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার বন্ধ করার উপায় দেওয়া হলো:

**অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করার পদ্ধতি:**

1. **সেটিংসে যান:
  • আপনার ফোনের "Settings" অ্যাপে যান।
2. **অ্যাপস নির্বাচন করুন:**
  •  "Apps" বা "Applications" অপশনটি সিলেক্ট করুন।
3. **বিশেষ অ্যাপ নির্বাচন করুন:**
  • যে অ্যাপটির ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করতে চান সেই অ্যাপটি সিলেক্ট করুন।
4. **ডেটা ব্যবহার অপশনে যান:**
  • "Data usage" বা "Mobile data & Wi-Fi" অপশনে যান।
5. **ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করুন:**
  • "Allow background data usage" অপশনটির পাশে থাকা সুইচটি টগল করে "Off" করে দিন।
6. **অপ্টিমাইজড অ্যাপ ব্যবহার করুন (ঐচ্ছিক):**
  • কিছু ফোনে "Battery optimization" অপশন থেকে অ্যাপ অপটিমাইজেশন সেট করতে পারেন, যা ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার সীমিত করবে।
আইফোনে ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করার পদ্ধতি:

1. **সেটিংসে যান:**
  • আপনার iPhone এর "Settings" অ্যাপে যান।
2. **মোবাইল ডেটা (Cellular) নির্বাচন করুন:**
  • "Mobile Data" বা "Cellular" অপশনটি সিলেক্ট করুন।
3. **অ্যাপ লিস্টে স্ক্রল করুন:**
  • নিচে স্ক্রল করে সমস্ত অ্যাপের তালিকা দেখুন যেগুলো মোবাইল ডেটা ব্যবহার করে।
4. **বিশেষ অ্যাপের ডেটা বন্ধ করুন:**
  • যে অ্যাপগুলোর জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করতে চান, সেগুলোর ডান পাশে থাকা সুইচটি টগল করে "Off" করে দিন।

অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করার উপকারিতা:

1. **ডেটা খরচ কমায়:**
  • ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ডেটা ব্যবহার বন্ধ করলে মোট ডেটা খরচ কমে যায়, যা বিশেষ করে সীমিত ডেটা প্ল্যান ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী।
2. **ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি করে:**
  • কম অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে চললে এবং কম ডেটা ব্যবহার হলে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো যায়।
3. **ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি পায়:** 
  • ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহার কমালে ব্যাটারি কম খরচ হয়, যা ফোনের ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
4. **ফোনের পারফরম্যান্স উন্নত হয়:**
  • কম অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চললে ফোনের প্রসেসর এবং RAM এর লোড কমে যায়, যা ফোনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
অপ্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা বন্ধ করা একটি কার্যকর পদ্ধতি যা আপনার স্মার্টফোনের ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে এবং ডেটা খরচ কমাতে সাহায্য করে। এটি ফোনের ব্যাটারি লাইফ। 

এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্সও উন্নত করে। তাই নিয়মিতভাবে আপনার ডিভাইসে কোন অ্যাপগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করা এবং অপ্রয়োজনীয় ডেটা ব্যবহার বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চাল

ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করা ইন্টারনেট ডেটা সাশ্রয় করতে এবং পেজ লোডের গতি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। অনেক ব্রাউজার ডেটা কমপ্রেশনের বিকল্প প্রদান করে, যা আপনার ডেটা খরচ কমায় এবং ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে। নিচে বিভিন্ন ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার উপায় দেওয়া হলো:
গুগল ক্রোমে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার পদ্ধতি: গুগল ক্রোমে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার "Data Saver" হিসেবে পরিচিত, কিন্তু এটি বর্তমানের নতুন সংস্করণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, আপনি অন্য কোনো ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ব্যবহার করতে পারেন, যেমন VPN সার্ভিস বা তৃতীয় পক্ষের ডেটা কমপ্রেশন অ্যাপ্লিকেশন।
মোজিলা ফায়ারফক্সে ডেটা কমপ্রেশন: মোজিলা ফায়ারফক্সে সরাসরি ডেটা কমপ্রেশন ফিচার নেই, তবে আপনি "Firefox Focus" ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন যা ট্র্যাকার ব্লকিং এবং ডেটা সাশ্রয়ে সহায়ক। 
সাফারি (Safari) ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন: সাফারি ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার নেই, তবে কিছু ফিচার যেমন “Content Blockers” আপনার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতায় ডেটা সাশ্রয় করতে সাহায্য করতে পারে।

অপারা ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার পদ্ধতি: অপারা ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার "Opera Turbo" হিসেবে পরিচিত। এটি চালু করতে:

1. **অপারা ব্রাউজার চালু করুন:**
  • আপনার অপারা ব্রাউজার খুলুন।
2. **সেটিংসে যান:**
  • ওপরে ডানদিকে তিনটি ডট আইকনে ক্লিক করুন এবং "Settings" নির্বাচন করুন।
3. **অপারেশন টার্বো চালু করুন:**
  • "Advanced" বিভাগে যান এবং "Privacy and Security" অপশন সিলেক্ট করুন। এরপর "Opera Turbo" অপশন চালু করুন।

### **উপকারিতা:**###

1. **ডেটা সাশ্রয়:** 
  • ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ব্যবহার করলে ওয়েব পেজের লোডিং টাইম কমবে এবং ডেটা খরচও কমবে।
2. **গতির উন্নতি:**
  • কমপ্রেসড ডেটা দ্রুত লোড হয়, যা ব্রাউজিংয়ের গতিকে বাড়িয়ে তোলে।
3. **ট্র্যাকার ব্লকিং:** 
  • অনেক ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ট্র্যাকার ও বিজ্ঞাপন ব্লক করতে সহায়ক, যা আপনার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা উন্নত করে।
ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করা ডেটা সাশ্রয় এবং ব্রাউজিং গতি বাড়ানোর একটি কার্যকর উপায়। আপনার ব্রাউজারের অনুযায়ী এই ফিচারটি চালু করে আপনি আরও ভালো একটি ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করা ইন্টারনেট ডেটা সাশ্রয় করতে এবং পেজ লোডের গতি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। অনেক ব্রাউজার ডেটা কমপ্রেশনের বিকল্প প্রদান করে, যা আপনার ডেটা খরচ কমায় এবং ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে। নিচে বিভিন্ন ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার উপায় দেওয়া হলো:

গুগল ক্রোমে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার পদ্ধতি:

গুগল ক্রোমে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার "Data Saver" হিসেবে পরিচিত, কিন্তু এটি বর্তমানের নতুন সংস্করণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, আপনি অন্য কোনো ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ব্যবহার করতে পারেন, যেমন VPN সার্ভিস বা তৃতীয় পক্ষের ডেটা কমপ্রেশন অ্যাপ্লিকেশন।
**মোজিলা ফায়ারফক্সে ডেটা কমপ্রেশন:**
মোজিলা ফায়ারফক্সে সরাসরি ডেটা কমপ্রেশন ফিচার নেই, তবে আপনি "Firefox Focus" ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন যা ট্র্যাকার ব্লকিং এবং ডেটা সাশ্রয়ে সহায়ক। 
সাফারি (Safari) ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন:
সাফারি ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার নেই, তবে কিছু ফিচার যেমন “Content Blockers” আপনার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতায় ডেটা সাশ্রয় করতে সাহায্য করতে পারে।

অপারা ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করার পদ্ধতি: অপারা ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন ফিচার "Opera Turbo" হিসেবে পরিচিত। এটি চালু করতে:
**অপারা ব্রাউজার চালু করুন:**
  • আপনার অপারা ব্রাউজার খুলুন।
2. **সেটিংসে যান:**
  • ওপরে ডানদিকে তিনটি ডট আইকনে ক্লিক করুন এবং "Settings" নির্বাচন করুন।
3. **অপারেশন টার্বো চালু করুন:**
  • "Advanced" বিভাগে যান এবং "Privacy and Security" অপশন সিলেক্ট করুন। এরপর "Opera Turbo" অপশন চালু করুন।

### **উপকারিতা:**###

1. **ডেটা সাশ্রয়:** 
  • ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ব্যবহার করলে ওয়েব পেজের লোডিং টাইম কমবে এবং ডেটা খরচও কমবে।
2. **গতির উন্নতি:**
  • কমপ্রেসড ডেটা দ্রুত লোড হয়, যা ব্রাউজিংয়ের গতিকে বাড়িয়ে তোলে।
3. **ট্র্যাকার ব্লকিং:** 
  • অনেক ডেটা কমপ্রেশন ফিচার ট্র্যাকার ও বিজ্ঞাপন ব্লক করতে সহায়ক, যা আপনার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা উন্নত করে।
ব্রাউজারে ডেটা কমপ্রেশন চালু করা ডেটা সাশ্রয় এবং ব্রাউজিং গতি বাড়ানোর একটি কার্যকর উপায়। আপনার ব্রাউজারের অনুযায়ী এই ফিচারটি চালু করে আপনি আরও ভালো একটি ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতি 

ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতি করা আপনার ইন্টারনেট সংযোগের গতি এবং স্থায়িত্ব বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। বাড়িতে বা অফিসে দুর্বল ওয়াইফাই সিগন্যাল অনেক সময় ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয় এবং পেজ লোডিং বা স্ট্রিমিং করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতি করা সম্ভব। নিচে ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতির জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলো:

**রাউটারের অবস্থান পরিবর্তন করুন:**
  • **মধ্যবর্তী অবস্থানে রাখুন:** রাউটারকে বাড়ির মাঝখানে একটি ওপেন স্থানে রাখুন, যেখানে সব জায়গায় সমানভাবে সিগন্যাল পৌঁছায়।
  • **মেঝে থেকে উঁচু স্থানে রাখুন:** রাউটারকে মেঝের কাছাকাছি না রেখে একটু উঁচু স্থানে রাখুন, যেমন শেলফ বা টেবিলের উপরে, যাতে সিগন্যাল ঠিকমতো ছড়ায়।
  • **প্রাচীর ও বাধা এড়িয়ে চলুন:** রাউটারকে প্রাচীর, ফার্নিচার বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে রাখুন, কারণ এগুলো সিগন্যাল ব্লক করতে পারে।
**রাউটারের অ্যান্টেনার অবস্থান ঠিক করুন:**
রাউটারের অ্যান্টেনা যদি থাকে, তবে সেগুলোকে সোজা এবং উল্লম্বভাবে রাখুন। যদি রাউটারে দুটি অ্যান্টেনা থাকে, একটি উল্লম্ব এবং অন্যটি অনুভূমিকভাবে রাখুন, যাতে সিগন্যাল যথাযথভাবে ছড়ায়।

**রাউটারের ফার্মওয়্যার আপডেট করুন:**
  • **ফার্মওয়্যার আপডেট:** রাউটারের নির্মাতা কোম্পানি নিয়মিত ফার্মওয়্যার আপডেট দেয় যা রাউটারের পারফরম্যান্স এবং সিকিউরিটি উন্নত করে। আপনার রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন।
**চ্যানেল পরিবর্তন করুন:**
  • **ওয়াইফাই চ্যানেল পরিবর্তন:** আশেপাশে অনেক ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক থাকলে আপনার রাউটার অন্যদের সাথে একই চ্যানেলে থাকতে পারে, যা ইন্টারফেরেন্স সৃষ্টি করতে পারে। আপনার রাউটারের সেটিংসে গিয়ে একটি কম ব্যবহৃত চ্যানেল সিলেক্ট করুন।
**৫ গিগাহার্টজ ব্যান্ড ব্যবহার করুন:**
  • **দ্বৈত-ব্যান্ড রাউটার:** যদি আপনার রাউটার দ্বৈত-ব্যান্ড (২.৪ GHz এবং ৫ GHz) সমর্থন করে, তাহলে ৫ GHz ব্যান্ড ব্যবহার করুন। এটি কম ইন্টারফেরেন্স সৃষ্টি করে এবং বেশি গতির সংযোগ দেয়।
*ওয়াইফাই রেঞ্জ এক্সটেন্ডার বা মেশ সিস্টেম ব্যবহার করুন:*
  • **ওয়াইফাই রেঞ্জ এক্সটেন্ডার:** বড় বাড়িতে বা অফিসে সিগন্যাল শক্তিশালী করতে ওয়াইফাই রেঞ্জ এক্সটেন্ডার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি রাউটার থেকে আসা সিগন্যালকে রিলে করে এবং বাড়ির দূরবর্তী অংশে সিগন্যাল পৌঁছায়।
  • *মেশ ওয়াইফাই সিস্টেম:* একটি মেশ ওয়াইফাই সিস্টেম পুরো বাড়িতে একটি শক্তিশালী এবং সঠিকভাবে বিতরণকৃত সিগন্যাল সরবরাহ করতে পারে।
**সংযুক্ত ডিভাইস সীমাবদ্ধ করুন:**
  • **সংযুক্ত ডিভাইস কমান:** একসাথে অনেক ডিভাইস সংযুক্ত থাকলে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে। তাই একই সময়ে অনেক ডিভাইস সংযুক্ত না রাখার চেষ্টা করুন।
**সিকিউরিটি বাড়ান:**
  • **ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন:** একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আপনার নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত করুন, যাতে অজানা ব্যবহারকারীরা আপনার ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারে।
  • **WPA3 এনক্রিপশন ব্যবহার করুন:** নিরাপত্তার জন্য WPA3 এনক্রিপশন ব্যবহার করুন, যা WPA2 থেকে উন্নত এবং নিরাপদ।
**রাউটারের রিবুট বা রিসেট করুন:**
  • **রাউটার রিবুট করুন:** রাউটার মাঝে মাঝে রিবুট করলে সেটি রিফ্রেশ হয় এবং পারফরম্যান্স উন্নত হয়।
  • **রাউটার রিসেট করুন (যদি প্রয়োজন হয়):** সবকিছু ঠিকমতো কাজ না করলে রাউটার ফ্যাক্টরি রিসেট করে পুনরায় কনফিগার করুন।
ওয়াইফাই সিগন্যালের উন্নতি করতে উপরের পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করতে পারেন। রাউটারের সঠিক অবস্থান, ফার্মওয়্যার আপডেট, চ্যানেল পরিবর্তন, এবং আধুনিক ডিভাইস ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার ওয়াইফাই সিগন্যালের গতি এবং স্থায়িত্ব বাড়াতে পারেন।

আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করুন

আপনার ফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং ব্রাউজার বা অ্যাপগুলি সর্বদা আপডেট রাখুন। অনেক সময় আপডেটেড ভার্সনগুলোতে বাগ ফিক্স ও অপটিমাইজেশন থাকে যা ইন্টারনেটের গতি উন্নত করতে পারে।

VPN ব্যবহার বন্ধ করুন

VPN (Virtual Private Network) ব্যবহার করলে ইন্টারনেট গতি কিছুটা ধীর হতে পারে। তাই যদি খুব দরকার না থাকে, তাহলে VPN বন্ধ করে ইন্টারনেট ব্যবহার করুন।

DNS সার্ভার পরিবর্তন করুন

অনেক সময় ডিফল্ট DNS সার্ভার ধীর হতে পারে। আপনি গুগল DNS (8.8.8.8 এবং 8.8.4.4) বা ওপেনDNS (208.67.222.222 এবং 208.67.220.220) ব্যবহার করে দেখতে পারেন, যা ইন্টারনেট গতি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

4G/5G ব্যবহার করুন

আপনার ডিভাইসে যদি 4G বা 5G সাপোর্ট করে, তাহলে এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন। এটি 3G এর তুলনায় অনেক দ্রুত গতির ইন্টারনেট প্রদান করে।

**রিস্টার্ট করুন:**
  • মাঝে মাঝে আপনার ফোনকে রিস্টার্ট করা ভালো, কারণ এটি ফোনের অপ্রয়োজনীয় ডেটা মুছে ফেলে এবং নেটওয়ার্ক সেটিংস রিফ্রেশ করে।
 ** অ্যাপ ক্যাশে মুছুন:**
  • অনেক অ্যাপ ক্যাশে জমা করে রাখে যা সময়ের সাথে সাথে অনেক হয়ে যেতে পারে এবং ইন্টারনেট গতি ধীর করতে পারে। সেটিংস > অ্যাপস > নির্দিষ্ট অ্যাপ > স্টোরেজ > ক্লিয়ার ক্যাশে করে ক্যাশে মুছে ফেলুন।
**অবাঞ্ছিত ফাইল এবং অ্যাপ মুছে ফেলুন:**
  • ফোনের স্টোরেজে অবাঞ্ছিত ফাইল এবং অ্যাপ জমা হলে এটি ফোনের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। নিয়মিত এই ধরনের ফাইল মুছে রাখুন।
এই উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার স্মার্টফোনের ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে পারেন এবং আরও মসৃণ ব্রাউজিং ও ডাউনলোডিং উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও, যদি নেটওয়ার্কের কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আপনার নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

সর্বশেষ কথা

স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো কেবলমাত্র একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় অভিজ্ঞতার জন্য নয়, বরং এটি আমাদের দৈনন্দিন কাজের গতি এবং দক্ষতা বাড়াতেও সহায়ক। উপরের কৌশলগুলো অনুসরণ করে, আপনি আপনার ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে পারেন এবং স্মার্টফোন ব্যবহারকে আরও আনন্দদায়ক করতে পারেন। 

মনে রাখবেন, একটি দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে হলে আপনাকে নিয়মিত ফোনের সেটিংস, অ্যাপ্লিকেশন এবং নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স মনিটর করতে হবে। যেকোনো সমস্যায় দ্রুত সমাধান করতে পারলে আপনার ডিজিটাল জীবন আরও সহজ ও উন্নত হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন